ডন প্রতিবেদন : কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ সোহেল হত্যা মামলার দুই আসামি বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এই দুজন হলেন মো. সাব্বির হোসেন (২৮) ও সাজন (৩২)। সোমবার (২৯ নভেম্বর) দিবাগত রাত পৌনে একটার দিকে কুমিল্লার গোমতী নদীর বেড়িবাঁধ–সংলগ্ন সংরাইশ বালুমহাল এলাকায় এই ঘটনা ঘটে বলে বুধবার (১ ডিসেম্বর) নিশ্চিত করেছে র্যাব।
এই দুজন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ সোহেল ও তাঁর সহযোগী হরিপদ সাহা হত্যা মামলার আসামি। সাব্বির ৩ ও সাজন ৫ নম্বর আসামি। পুলিশ বলছে, সাজন কাউন্সিলর সোহেলের বুকের বাঁ পাশে গুলি করেছিলেন। সাব্বির সোহেলকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করেছিলেন।
সাব্বির হোসেনের বাড়ি কুমিল্লা নগরের সুজানগর পানির ট্যাংক এলাকায়। তিনি ওই এলাকার রফিক মিয়ার ছেলে। সাজনের বাড়ি নগরের সংরাইশ রহিম ডাক্তারের গলির ভেতরে। তিনি ওই এলাকার কাঁকন মিয়া ওরফে চোরা কাঁকনের ছেলে।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহান সরকার বলেন, রাত সোয়া ১২টার দিকে পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, কাউন্সিলর হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ও অজ্ঞাতনামা আসামিরা কুমিল্লা নগরের সংরাইশ ও নবগ্রাম এলাকায় অবস্থান করছেন। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশের একাধিক দল গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে অভিযান শুরু করে। রাত পৌনে একটার দিকে পুলিশ সদস্যরা গোমতী নদীর বেড়িবাঁধের কাছে পৌঁছালে আসামিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকেন। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, গোলাগুলি বন্ধ হলে ঘটনাস্থলে দুই ব্যক্তিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে তাঁদের উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত সোয়া একটার দিকে তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন। পরে তাঁদের সাব্বির হোসেন ও সাজন হিসেবে শনাক্ত করা হয়। গোলাগুলির সময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। তাঁদের পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, একটি পাইপগান, পিস্তলের অব্যবহৃত গুলি, গুলির খোসা ও কার্তুজের খোসা উদ্ধার করা হয়।
২২ নভেম্বর বিকেল সাড়ে চারটার দিকে কুমিল্লা নগরের পাথুরিয়াপাড়া থ্রি স্টার এন্টারপ্রাইজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে কাউন্সিলর মোহাম্মদ সোহেল ও তাঁর সহযোগী হরিপদ সাহাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। এই ঘটনায় পরেরদিন রাত সোয়া ১২টার দিকে নিহত কাউন্সিলরের ছোট ভাই সৈয়দ রুমন বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। সোমবার (২৯ নভেম্বর) পর্যন্ত পুলিশ এজাহারভুক্ত পাঁচজন ও সন্দেহভাজন একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আর বন্দুকযুদ্ধে এজাহারভুক্ত দুই আসামি নিহত হয়েছেন। বাকি চার আসামি শাহ আলম, সোহেল ওরফে জেল সোহেল, সায়মন ও রনি পলাতক।