নৌকাডুবিতে কনস্টেবল সোহেল রানার পরিবারের সবাই শেষ
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : সাজানো সংসার ছিরো কনস্টেবল সোহেল রানার। স্ত্রী মৌসুমী (২৫) ও দুই সন্তান ছিলো তাঁর। ভৈরব হাইওয়ে থানার কনস্টেবল সোহেল রানার (৩০) মেয়ে মাহমুদা সুলতানা ইভার বয়স সাত, আর ছেলে রাইসুলের পাঁচ বছর। শুক্রবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় ভৈরবে মেঘনা নদীতে ট্রলারডুবিতে পরিবারটির কেউ আর বেঁচে নেই।
নিখোঁজ চারজনের মধ্যে গত তিনদিনে একে একে সকলের মরদেহ উদ্ধার হয়। সোমবার সকালে সোহেল ও তার ছেলে রায়সুলের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। এর আগে শনিবার স্ত্রী মৌসুমী আক্তার ও রোববার মেয়ে মাহমুদার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সোহেল কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে। তিনি ২০১১ সালে পুলিশ কনস্টেবল পদে যোগ দেন।
ভৈরব হাইওয়ে থানার ওসি সাজু মিয়া বলেন, সোহেল রানা আমাদের সহকর্মী ছিলেন। এভাবেই পুরো পরিবারটি দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার খবরে আমরা মর্মাহত। তার পরিবারের সবার মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। স্ত্রী মৌসুমী আক্তারের মরদেহ উদ্ধারের পর শনিবার রাতে দেবিদ্বারে গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়। সোমবার (২৫ মার্চ) বাদ জোহর ভৈরব হাইওয়ে থানার সামনে সোহেল ও তার দুই সন্তানের জানাজা শেষে মরদেহ দাফনের জন্য স্বজনরা গ্রামের বাড়িতে যান।
সোহেলের ভগ্নিপতি ফেনীর মহিপাল হাইওয়ে পুলিশের এএসআই সাইফুল ইসলাম বলেন, তিনজনের মরদেহ নিয়ে দেবিদ্বারের পথে আছি। বাদ আছর জানাজা শেষে পাশাপাশি কবরে তাদের দাফন করা হবে। এদিকে এক সঙ্গে চারজনের মৃত্যুর খবরে সোহেলের গ্রামের বাড়িতে ভিড় করছেন এলাকার লোকজন। সেখানে শোকের পরিবেশ নেমে এসেছে।
শুক্রবার বিকেলে সোহেল তার স্ত্রী, দুই সন্তান ও ভাগনি মারিয়াকে নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের সোনারচর দ্বীপ গ্রাম দেখতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে নৌকায় থাকা কয়েকজন ছবি তোলার জন্য মাঝিকে অনুরোধ করলে মাঝি তার হাতের বৈঠা ছেড়ে ছবি তুলে দিচ্ছিলেন। এ সময় নৌকাটি কিছুটা নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে। তখন বিপরীত দিক থেকে আসা বালুবাহী একটি বাল্কহেড ট্রলারটিকে ধাক্কা দিলে নৌকা উল্টে যায়। এ সময় মারিয়া প্রাণে বেঁচে গেলেও অপর চারজন পানিতে তলিয়ে যায়।
নৌকাডুবির এ ঘটনায় সোমবার আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি হলেন কটিয়াদী উপজেলার মানিকখালী এলাকার ইলেকট্রিক মিস্ত্রি বেলন দে (৫০)। এই দুর্ঘটনায় মোট ৯ জনের মৃত্যু হলো। অন্যরা হলেন- ভৈরবের কমলপুর এলাকার স্বপন মিয়ার মেয়ে সুবর্ণা (২৫), আমলাপাড়ার টুটন দের ৫ম শ্রেণি পড়ুয়া মেঘলা দে আরাধ্যা (১১), আমলাপাড়া এলাকার ঝন্টু দের ন্ত্রী রুপা দে (৩০) ও নরসিংদীর বেলাব উপজেলার দাড়িয়াকান্দি এলাকার দারু মিয়ার মেয়ে আনিকা আক্তার (১৭)।