ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্স : আঞ্চলিক রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অংশীদারত্ব সুদৃঢ় হওয়ার আশা
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : ঢাকায় আজ শুক্রবার (১২ মে) থেকে শুরু হচ্ছে দুদিনের ষষ্ঠ আন্তর্জাতিক ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্স। ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ ২৫টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।
এ ছাড়া ডি-৮, সার্ক ও বিমসটেকের মহাসচিব, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিক্ষাবিদ, পণ্ডিত, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীসহ আরও দেড় শতাধিক প্রতিনিধি সম্মেলনে অংশ নেবেন।
ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এই কনফারেন্স উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। সম্মেলনের উদ্বোধন করা ছাড়াও আগত অতিথিদের সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নেবেন সরকারপ্রধান।
প্রথম দিনের অনুষ্ঠানে আজ চারটি প্রাক-সম্মেলন সেশন থাকবে। শনিবার দ্বিতীয় দিনে মন্ত্রী পর্যায়ের চারটি থিমেটিক সেশন হবে। এসব সেশনে আমন্ত্রিত মন্ত্রী ও মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেবেন। এছাড়া এদিন সকল মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধিদের ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শনে নিয়ে যাওয়া হবে।
করোনাভাইরাস-পরবর্তী অবস্থা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে এবারের কনফারেন্সের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘পিস, প্রসপ্যারেটি অ্যান্ড পার্টনারশিপ ফর আ রেসিলিয়েন্ট ফিউচার’।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন জানিয়েছেন, ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্স মূলত ভারত মহাসাগরের উপকূলবর্তী দেশগুলোকে নিয়ে আয়োজন করা হয়। তবে এতে পরিবর্তিত বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক বিষয়াদি নিয়েও আলোচনা হয়ে থাকে।
সম্মেলনে অংশ নিতে মরিশাসের রাষ্ট্রপতি, মালদ্বীপের উপ-রাষ্ট্রপতি, ভারত, ভুটান, নেপাল, বাহরাইন ও সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সিশেলস, শ্রীলঙ্কা, মাদাগাস্কারের মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধি ঢাকায় এসেছেন।
আর শুধু সম্মেলনে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আক্তার।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন জানিয়েছেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার কোনো দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হচ্ছে না। তবে সম্মেলনের সাইড লাইনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কোনো না কোনো ফর্মে সৌজন্য সাক্ষাৎ হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন তিনি।
ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্স আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে আঞ্চলিক রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে ভারত মহাসাগর উপকূলবর্তী দেশগুলোর সঙ্গে অংশীদারত্ব সুদৃঢ় হবে বলে আশাবাদী পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, পরিবর্তনশীল ভূ-রাজনৈতিক এবং ভূ-অর্থনেতিক বাস্তবতার নিরিখে সম্মেলনটি আয়োজনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিশেষ অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান আরও সুসংহত হবে।
মোমেন বলেন, সম্মেলনের আলোচনা থেকে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো চলমান বৈশ্বিক ঘটনার প্রেক্ষিতে ভবিষ্যতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে, সে বিষয়ে ধারণা পাওয়া যাবে। পরবর্তীতে বিভিন্ন সংকট পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং তা থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাংলাদেশের জন্য সহায়ক হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্স হয়েছে পাঁচবার। ২০১৬ সালে সিঙ্গাপুরে, ২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কায়, ২০১৮ সালে ভিয়েতনামে, ২০১৯ সালে মালদ্বীপে এবং ২০২১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।