ঢাবি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ-ছাত্রদল সংঘর্ষ।
নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঙলা কাগজ; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৪ মে) বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটের দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় ছাত্রলীগের প্রতিরোধের মুখে ঢাবি ক্যাম্পাসের দোয়েল চত্বর এলাকা ছেড়ে চলে যান ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
পরে হামলার প্রতিবাদে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ছাত্রদল। মিছিলে ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আকতার হোসেন ও সদস্যসচিব আমানউল্লাহ আমান নেতৃত্ব দেন।
মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলের সামনে পৌঁছালে হলের ভেতর ও আশপাশ থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা কিছুটা পিছু হটেন। কিন্তু মিনিটখানেকের মধ্যেই তারা আবার লাঠিসোঁটা হাতে সংগঠিত হয়ে ছাত্রলীগকে ধাওয়া দেন। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তখন পিছু হটে শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের সামনে অবস্থান নেন।
আর ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা দোয়েল চত্বরে অবস্থান নেন। এ সময় দুই পক্ষের মুহুর্মুহু ইট-ছোড়াছুড়ি চলতে থাকে। ছাত্রলীগের পাল্টা ধাওয়ায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা দৌড়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ছাত্রলীগের হয়ে এই পাল্টা ধাওয়ায় নেতৃত্ব দেন কেন্দ্রীয় সাহিত্যবিষয়ক উপসম্পাদক এস এম রিয়াদ হাসানসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল শাখার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকেরা।
এই পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার পর ছাত্রদল ক্যাম্পাস ছাড়লেও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের লাঠিসোঁটা হাতে দেখা গেছে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদের এক বক্তব্যের পর গত রোববার সন্ধ্যায় টিএসসি এলাকায় ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মীর ওপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা করেন। ওই ঘটনার প্রতিবাদ ও সাইফ মাহমুদের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে ছাত্রদলের সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা ছিলো। সেখানে যাওয়ার পথেই তারা এ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় জড়িয়ে পড়ে।
এদিকে, ছাত্রদলের ওপর এই হামলাকে ‘প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেন, রাজাকারদের তল্পিবাহক ও সন্ত্রাসের ডিস্ট্রিবিউটর ছাত্রসংগঠন ছাত্রদল তাদের সহিংস সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ বিঘ্নিত করছে। এর ধারাবাহিকতায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করার চেষ্টা করেছে।
শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখা ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপদ শিক্ষাজীবন নিশ্চিত করার স্বার্থে সব মতের প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ছাত্রদলের সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে বলেই জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।