দুই বছর পর সাড়ম্বরে কুমারী পূজা উদ্যাপন
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ ও ডন: শারদীয় দুর্গোৎসবের মহা অষ্টমীতে অনুষ্ঠিত হলো কুমারী পূজা। করোনা বিধিনিষেধের কারণে দুই বছর পর সাড়ম্বরে উদ্যাপন করা হলো এ পূজা। পূজার জন্য আশীর্বাদ ও প্রার্থনায় মন্দিরে মন্দিরে ভিড় করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
সোমবার (০৩ অক্টোবর) বৃষ্টিস্নাত ভোরে অঞ্জলি আর কুমারী পূজার আয়োজনে সুগন্ধি চন্দন, পুষ্পমালা, ধূপদীপে সমারোহে উদ্যাপিত হয় মহা অষ্টমীর অর্চনা।
গঙ্গাজল, শুদ্ধ বস্ত্র আর পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র- নিয়ে সবার মঙ্গল কামনার মন্ত্র পাঠের মধ্য দিয়ে চলে অঞ্জলি দেওয়ার আচার আচরণ হয়।
দেবীদুর্গা সব নারীর মধ্যে মাতৃরূপে আছেন- এ উপলব্ধি সকলের মধ্যে জাগ্রত করার জন্যই কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
ষোলো বছর পর্যন্ত কুমারীর মধ্যে মাতৃভাব প্রতিষ্ঠাই এ পূজার মূল লক্ষ্য। পরে অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে অনুষ্ঠিত হবে সন্ধি পূজা। এক্ষেত্রে ১০৮টি মাটির প্রদীপ ও ১০৮টি পদ্মফুল উৎসর্গ করে দেবীর পূজা করা হবে।
কুমারী পূজা হলো এক বিশেষ ধরনের পূজা। যে পূজায় এক কিশোরী কন্যাকে দেবীর আসনে বসিয়ে মাতৃরূপে পূজা-অর্চনা করা হয়। শঙ্খের ধ্বনি, কাঁসর ঘণ্টা, ঢাকের বাদ্য, উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে কুমারী মাকে পুষ্পমাল্য পরিয়ে দেওয়া হয়। অষ্টমী তিথির পূজা শেষে হয় কুমারী পূজা। অষ্টমী ছাড়াও অনেক জায়গায় নবমীর দিনেও করা হয় কুমারী পূজা। কালী পূজা, জগদ্ধাত্রী পূজা, অন্নপূর্ণা পূজা এমনকি শক্তি পূজাতেও কুমারী পূজা করা হয়।
হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, মা কালীর হাতে কলাসুর বধের প্রতীকী হলো কুমারী পূজা। কথিত রয়েছে, কলাসুর স্বর্গ ও মর্ত্য অধিকার করে নিয়েছিলো। দেবতারা মা কালীর কাছে উদ্ধারের জন্য প্রার্থনা করেন। তাঁদের আর্তি শুনে মা কালী আবার জন্ম নেন শিশুকন্যা রূপে এবং কলাসুরকে বধ করেন।
এ পূজার বৈশিষ্ট্য হলো : কুমারীকে পূজা করার সময় দেখা হয় না তাঁর ধর্ম, জাত-পাত। এখনো ঋতুবতী হয় নি ১ থেকে ১৬ বছর বয়সি যে কোনও মেয়েই কুমারী হতে পারেন। এমনকি বারবনিতার সন্তানও কুমারীরূপে পূজিত হতে পারে।