সিমেন্টের কাঁচামালে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি ব্যবসায়ীদের
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ ও ডন : সিমেন্ট শিল্পের কাঁচামাল লাইমস্টোন বা চুনাপাথর আমদানির ক্ষেত্রে সম্প্রতি ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে আমদানিতে আগের চেয়ে ২ শতাংশ বেশি অগ্রিম আয়কর আরোপ করা হয়। ফলে সিমেন্ট শিল্প চরম ক্ষতির মুখে পড়ছে জানিয়ে আরোপিত এই সম্পূরক কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন এই খাতের ব্যবসায়ীরা। একইসঙ্গে তাঁরা আমদানি ও বিক্রয় পর্যায়ে অগ্রিম আয়কর সর্বোচ্চ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় বাংলাদেশ সিমেন্ট প্রস্তুতকারক সমিতি (বিসিএমএ)।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিসিএমএ সভাপতি আলমগীর কবির। এ সময় বিসিএমএ’র জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. শহীদুল্লাহ, নির্বাহী সদস্য আমিরুল হক ও নির্বাহী পরিচালক শংকর কুমার রায়সহ বেশ কয়েকটি সিমেন্ট কোম্পানির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আলমগীর কবির জানান, চুনাপাথর আমদানির ক্ষেত্রে আগে থেকেই ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর এবং ৩ শতাংশ অগ্রিম আয়কর রয়েছে। তবে হঠাৎ করেই সম্প্রতি এই পণ্য আমদানিতে ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
‘এ ছাড়া অগ্রিম আয়কর বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। এই অতিরিক্ত শুল্কায়নের ফলে চুনাপাথর ছাড় করাতে বর্তমানে ৬৭ শতাংশ শুল্ক ও কর পরিশোধ করতে হচ্ছে। আগে এই পরিমাণ ছিলো ২৭ শতাংশ।’
তিনি বলেন, সাধারণত সম্পূরক শুল্ক করা হয় বিলাসদ্রব্য, অপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও সামাজিকভাবে নিরুৎসাহিত পণ্যের ক্ষেত্রে। তবে নির্মাণ সামগ্রী হিসেবে সিমেন্ট জনগণের মৌলিক চাহিদা বাসস্থান নির্মাণে ব্যবহার হয়। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পের কাঁচামাল চুনাপাথর আমদানিতে কেনো সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হলো, তা আমাদের বোধগম্য নয়।
চুনাপাথরকে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ী কাঁচামাল দাবি করে আলমগীর কবির বলেন, সিমেন্ট উৎপাদনের জন্য পাঁচটি প্রধান কাঁচামাল হলো- ক্লিংকার, স্লাগ, চুনাপাথর, ফ্লাই অ্যাশ ও জিপসাম। এর মধ্যে অন্যান্য কাঁচামালের তুলনায় চুনাপাথর আমদানির মূল্য সবচেয়ে কম। এখন বাড়তি শুল্কের কারণে চুনাপাথর আমদানিতে নিরুৎসাহিত হতে পারেন ব্যবসায়ীরা। এতে অন্য কাঁচামাল আমদানির পরিমাণ বাড়লে তাতে শেষ পর্যায়ে ডলারের ওপর চাপ বাড়বে।
ব্যবসায়ীরা বলেন, অগ্রিম আয়কর কমানোর বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে বলে আসলেও সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল বিষয়টি যথাযথ গুরুত্ব দিচ্ছে না। উল্টো আমদানি পর্যায়ে আরও ২ শতাংশ আয়কর আরোপ করা হয়েছে।
আলমগীর কবির বলেন, আমদানি পর্যায় ছাড়াও বিক্রয় পর্যায়েও ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর ধার্য করা আছে। অর্থাৎ একটি সিমেন্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লোকসান করলেও অগ্রিম আয়কর পরিশোধ করতে হবে, যা কোনও বিবেচনায়ই গ্রহণযোগ্য নয়। এজন্য সিমেন্ট খাতের উদ্যোক্তারা আমদানি ও বিক্রয় পর্যায়ে অগ্রিম আয়কর সর্বোচ্চ দশমিক ৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছেন।
ডলার সঙ্কটের কারণে সিমেন্টের কাঁচামাল আমদানিতে বিঘ্ন ঘটছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।