আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন : এ যেনো এক অভিনব বিজয়া দশমী। শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) ভারাক্রান্ত হৃদয়ে হিন্দু বাঙালিরা ঘরের মেয়ে উমাকে মর্ত্য থেকে কৈলাসে পাঠানোর তোড়জোড় শুরু করেছেন। দেবীবরণ থেকে সিঁদুর খেলার পালা চলছে বনেদি বাড়ি থেকে শুরু করে বারোয়ারি পুজোগুলোতে। দক্ষিণ দমদম এলাকার অমরপল্লি সর্বজনীন দুর্গোৎসবে দেবীবরণ থেকে সিঁদুর খেলায় জাতি ভেদাভেদ মুছে অংশ নিলেন হিন্দু ও মুসলিম মহিলারা। যোগ দিলেন সমাজের পিছিয়ে পড়া আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রমীলারাও। সংক্রমণ এড়াতে সকলের পরনে ছিল পিপিই কিট।
শুধু যে বর্ণ ও জাতিগত বৈষম্য ভুলে তাঁদের দেবীবরণ-পর্বকে স্মরণীয় করে তুলেছেন অমরপল্লির মহিলা সদস্যরা, এমনটা নয়। করোনা সংক্রমণের কথা মাথা রেখেই সিঁদুর খেলায় শামিল মহিলাদের দেওয়া হয়েছিলো পিপিই কিট। মোট ৫২ জন মহিলা পিপিই কিট পরে দেবীবরণ এবং সিঁদুর খেলায় অংশ নিলেন। ৩০ জন হিন্দু বিবাহিতা মহিলারসঙ্গে ১০ জন মুসলিম মহিলা এবং ১২ জন আদিবাসী অংশ নিয়েছেন বিজয়ার সিঁদুর খেলায়।
নিজেদের এমন উদ্যোগ নিয়ে পুজো কমিটির সভাপতি অমিত পোদ্দার বলেন, ‘বাংলার ঐতিহ্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সঙ্গেশ্রেণিহীন সমাজও। তাই সেই ভাবনা থেকেই হিন্দু মহিলাদেরসঙ্গে যেমন আদিবাসী মহিলাদের আমরা ঠাকুর বরণে শামিল করেছি। তেমনই, মুসলমান মহিলাদেরও সিঁদুর খেলায় অংশগ্রহণ করিয়েছি।’
অমরপল্লির মণ্ডপ সাজাতেই মেদিনীপুরের পিংলা ও চণ্ডীপুর থেকে পটশিল্পী হিসেবে এসেছিলেন মুসলিম মহিলারা। পুজোর সময় সেখানে একটি মেলাতে তাঁরা নিজেদের হস্তশিল্প বিক্রি করে উপার্জনও করেছেন। পুজোর পরে অমরপল্লিতেই ছিলেন শিল্পীরা। তখনই উদ্যোক্তাদের মাথায় আসে ধর্ম নির্বিশেষে সিঁদুর খেলায় অংশ নেওয়ার বিষয়টি। শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) এলাকার মহিলাদেরসঙ্গে তাঁরাও অংশ নেন ঠাকুর বরণ থেকে শুরু করে সিঁদুর খেলায়।
সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে মহিলাদের পিপিই কিট পরানো হয়েছিলো। পুজো কমিটির কর্তা অমিত বলেন, ‘আমরা সকলেই চাই, করোনা চলে যাক। আগামী বছর যাতে আমরা করোনার কোনওরকম আশঙ্কা ছাড়াই দুর্গাপুজো কাটাতে পারি। পিপিই কিট পরে মহিলারা দেবীর কাছে সেই প্রার্থনাই জানিয়েছেন।’