সারাদেশে বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ ও ডন : নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি।
বুধবার রাত ৮টায় বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির জরুরি ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভা শেষে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।
সভায় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপি জানায়, বৈঠকে নয়াপল্টনের ঘটনা নিয়ে আলোচনা করা হয়, পুলিশের হামলার নিন্দা জানানো হয় এবং আটক নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করা হয়। এছাড়া হত্যা, গণ-গ্রেপ্তারের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়।
বিএনপির গণসমাবেশের দুইদিন আগে বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীর দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশপাশ হয়ে ওঠে রণক্ষেত্র। এ সময় পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে। বিএনপি নেতাকর্মীরা পাল্টা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। ওই এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণেরও শব্দ শোনা যায়।
সংঘর্ষে মকবুল হোসেন (৪৫) নামে একজন নিহত হন। আহত হন পুলিশসহ অর্ধশতাধিক। নিহত মকবুল হোসেন মিরপুরের লালমাটিয়ার বাউনিয়াবাঁধের বাসিন্দা। আহতদের মধ্যে ২২ জনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় অনেক নেতাসহ তিন শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
বুধবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে বিএনপির কার্যালয়ে অভিযানে যায় পুলিশ। সেখান থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবীর খোকন, ফজলুল হক মিলন, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক ও মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, জলবায়ুবিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাকসহ তিন শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়।
উল্লেখ্য, ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশস্থল নিয়ে সরকার ও বিএনপির মধ্যে টানাপোড়েন চলছিল। দলটি নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে চায়। আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শর্তসাপেক্ষে সমাবেশ করার অনুমতি দেয় পুলিশ। তবে বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ না করার ব্যাপারে অনড়। তবে বিকল্প স্থান হিসেবে তারা আরামবাগ, জাতীয় ঈদগাহে যেতে রাজি। তবে সরকার বলে আসছে, কোনোভাবে রাস্তার ওপর বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে না। সোহরাওয়ার্দীর বিকল্প হিসেবে তারা উন্মুক্ত কোনো মাঠ চাইলে দেওয়া হবে। সমাবেশের স্থান নিয়ে দু'পক্ষ ভিন্ন মেরুতে অবস্থানের মধ্যে নয়াপল্টনে গতকাল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গত রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও শনিবার নয়াপল্টনে গণসমাবেশ করার ব্যাপারে অনড় ছিলেন নেতারা।