রামপালে ডাকাতির চেষ্টা! : ৫ জন আহত, গ্রেপ্তার ১১
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে মালামাল নিয়ে পালাতে থাকা লোকজনকে আটকাতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন নিরাপত্তাকর্মীরা। এ সময় ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যসহ কেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৫ জন আহত হন। পরে ৩০ রাউন্ড গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বুধবার (৩ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের উত্তর-পশ্চিমে (মেটেরিয়াল ইয়ার্ড) ৩ নম্বর টাওয়ার (ডিউটি পোস্ট) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আহতরা হলেন : এসএসএসএলের নিরাপত্তা সুপারভাইজার আকরাম (৫৫), সাইদুল ইসলাম (৩৭), মিন্টু বৈরাগী (৪০) ব্রজেন মন্ডল (৩০) ও আনসার ব্যাটালিয়নের হাবিলদার কামাল পাশা (৩৮)। তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে বিদ্যুৎকেন্দ্রের অভ্যন্তরীণ চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হয়। পরে রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। গুরুতর আহত ব্রজেন মন্ডল ও আনসার সদস্য কামাল পাশাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, সেন্ট্রি সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেড (এসএসএসএল) নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা ঘটনার সময় বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওই এলাকায় দায়িত্বে ছিলেন।
রড, স্কার্ভসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে কয়েকজনকে দেখে তাদের আটকাতে গেলে নিরাপত্তাকর্মীদের ওপর দলবেঁধে হামলা করে তারা। এ সময় তাদের আটকে রেখে বেধড়ক মারধর করে কাছে থাকা মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা।
এলোপাতাড়ি মারধরের কারণে আহতদের প্রত্যেকের শরীরে জখম রয়েছে জানিয়ে রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা রুহুল আমিন সজিব বলেন, রাত ১টার দিকে তাদের হাসপাতালে আনা হয়। তাঁদের মধ্যে দুজনের মাথায় গভীর ক্ষত রয়েছে। তাঁদের খুলনায় পাঠানো হয়েছে। অন্যদের এখানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের উপ-মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম বলেন, রাতে প্লান্টের ৫ ইয়ার্ডে একদল ডাকাত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করে মালামাল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলো। এ সময় বাধা দিলে নিরাপত্তাকর্মীদের ওপর হামলা হয়। এতে ৫ জন আহত হয়েছেন।
রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি এসএসএসএলের নিরাপত্তা সুপারভাইজার আকরাম হোসেন বলেন, কেন্দ্রের উত্তর-পশ্চিম কোণের ৩ নম্বর টাওয়ার (ডিউটি পোস্ট) এলাকায় কয়েকজনকে কিছু স্কার্ভ ও রড নিয়ে পালাতে দেখে বাধা দিতে যায় তারা। এ সময় দু’দিক দিয়ে ৫০-৬০ জন তাদের ওপর হামলা করে। এলোপাতাড়ি মারধর করে তাদের আটকে রেখে পাশের মেটেরিয়াল ইয়ার্ড থেকে মালামাল নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলো। তখন আনসার সদস্যরা এলে তাঁদের ওপরও হামলা করে। এ সময় একজন আনসার সদস্যকে রড ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করে গুরুতর জখম করে। পরে আরও আনসার ও পুলিশ সদস্যরা এসে গুলি ছুড়লে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, ৩ নম্বর টাওয়ার এলাকার পাশে তারকাটা বেড়া। হামলাকারীরা ওই বেড়া কেটে মালামাল নিতে রাতে ঝোঁপঝাড়ের জঙ্গল পেরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। তারা লোহার রড, বিভিন্ন স্কার্ভসহ বেশকিছু মালামালও নিয়ে গেছে।
৩ আনসার ব্যাটালিয়নের পরিচালক মোল্লা আবু সাইদ বলেন, বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মীদের ওপর হামলার খবর পেয়ে আনসার সদস্যরা এগিয়ে যায়। এ সময় তাঁদের ওপর হামলা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৩০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। আমাদের একজন সদস্য আহত হয়েছে।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেলুর রহমান বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে পুলিশের একাধিক টিক কাজ করেছে।