আড়াইশ বছর আগে জন্ম নিয়েছিলেন এক যে রাজা।

আড়াইশ বছর আগে জন্ম নিয়েছিলেন এক যে রাজা।

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : নবজাগরণের অগ্রদূত রাজা রামমোহন রায়ের জন্মবার্ষিকী আজ রোববার (২২ মে)। তিনি প্রথম ভারতীয় ধর্মীয়-সামাজিক পুনর্গঠন আন্দোলন ব্রাহ্মসমাজের প্রতিষ্ঠাতা এবং বাঙালি দার্শনিক।

স্বপ্ন দেখেছিলেন, এক নতুন ভারতের। শুধু স্বপ্ন দেখেন নি, কাজ করে শুধরে দিয়েছেন। নতুন জাগরণে দিক্ষিত করেছেন। ১৮২৯ সালের ৪ ডিসেম্বর লর্ড বেন্টিঙ্ক রাজা রামমোহনের সঙ্গে একমত হয়ে সতীদাহ আইন করে বন্ধ করলেন। এই কাজ যতো সহজ মনে হচ্ছে, ততোটাই ছিলো কঠিন। কারণ যে কারো কাছেই প্রথা ভাঙা ভীষণ কঠিন।

তিনি চেয়েছিলেন, যে ভারতে থাকবে না কোনও কুসংস্কার। দেশের মানুষকে অতীতমুখী, মধ্যযুগীয় মানসিকতার গণ্ডি থেকে বের করে এনে এক নতুন যুগের দর্শন আলো দেখানোই ছিলো রামমোহনের লক্ষ্য। কতো নারী তাজা প্রাণ হারিয়েছে- সতীদাহের কবলে, কতো নারী তাঁর সুখ স্বপ্ন বিসর্জন দিয়েছে স্বামীর মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে। তখন হিন্দু বিধবা নারীদের স্বামীর চিতায় সহমরণে যেতে বা আত্মহুতি দিতে বাধ্য করা হতো। ইচ্ছা, অনিচ্ছা নয় যেতেই হবে। স্বামী মারা গেছে মানে স্ত্রী-ও শেষ।

রামমোহন রায়ের উদ্যোগে বন্ধ হলো কুসংস্কারের জ্বালামুখী এক প্রকাশ- সতীদাহ প্রথা। মুক্তি পেলো নারী। রামমোহন রায় কলকাতায় আগস্ট ২০, ১৮২৮ সালে ইংল্যান্ড যাত্রার আগে দ্বারকানাথ ঠাকুরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ব্রাহ্মসমাজ স্থাপন করেন। পরে এই ব্রাহ্মসমাজ এক সামাজিক ও ধর্মীয় আন্দোলন এবং বাংলার পুনর্জাগরণের পুরোধা হিসাবে কাজ করে। রামমোহন রায় একেশ্বরবাদে বিশ্বাস করতেন।

১৮১৫ থেকে ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তাঁর যেসব গ্রন্থ প্রকাশিত হয়, তার মধ্যে রয়েছে- বেদান্তগ্রন্থ, বেদান্তসার, কেনোপনিষদ, ঈশোপনিষদ, কঠোপনিষদ, মাণ্ডূক্যোপনিষদ ও মুণ্ডকোপনিষদ।

সমাজের রক্ষণশীল ব্যক্তিরা কার্যত একরোখা হয়ে ওঠেন রামমোহন রায়ের ওপর। সকলে একাত্ম হয়ে তাঁর লেখার প্রতিবাদ করতে লাগলেন। তবে রামমোহন প্রতিবাদ করলেন যুক্তি দিয়ে এবং ভদ্রভাষায়। প্রতিবাদ-কর্তারা থেমে গিয়েছিলেন। প্রতিবাদ-কর্তাদের মধ্যে প্রথম ও প্রধান ছিলেন মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার, এঁর গ্রন্থের নাম ‘বেদান্তচন্দ্রিকা’।

রাজা রামমোহন রায় ১৭৭২ সালের ২ মে জন্মগ্রহণ করেন।