বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সতর্ক অবস্থান

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সতর্ক অবস্থান

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ ও ডন : রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকায় দুই দিকের রাস্তা জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। আর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের সময় আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে শটগান হাতে গুলি ছুঁড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া সেই ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া গেছে।

পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের সময় আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে শটগান হাতে গুলি ছোঁড়া ওই ব্যক্তির নাম মাহিদুর রহমান। তিনি রাজধানীর পল্টন থানায় দায়িত্বরত আনসার সদস্য (অঙ্গীভূত)।

বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, যাঁরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে ছাত্রলীগ কর্মী বলে গুজব ছড়াচ্ছে, তাঁদের শনাক্ত করার কাজ চলছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।

এর আগে বুধবার (৭ ডিসেম্বর) পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষের সময় আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে শটগান হাতে এক ব্যক্তির ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের অনেকে আর্জেন্টিনার জার্সি পরিহিত ওই ব্যক্তিকে ছাত্রলীগ কর্মী বলে দাবি করেন। এরপর তাঁর পরিচয় নিয়ে নানা মহলে আলোচনা শুরু হয়। তবে বৃহস্পতিবার পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শটগান হাতে আর্জেন্টিনার জার্সি পরা ওই ব্যক্তি ছাত্রলীগ কর্মী নন, তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।

নয়াপল্টনের সড়ক খুলে দিয়েছে পুলিশ :
রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকায় দুই দিকের রাস্তা জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেল চারটার দিকে নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুলের দিকে যাওয়ার রাস্তা এবং ফকিরাপুল থেকে নাইটিঙ্গেল মোড়ের দিকে চলাচলের সড়ক খুলে দেওয়া হয়। এর আগে বুধবার বিকেলে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর এ এলাকায় সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এদিকে রাস্তা খুলে দেওয়ার পর বিএনপির নেতাকর্মীরা দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হচ্ছেন। তাঁরা মিছিল স্লোগান না দিলেও কার্যালয়ে ও এর আশপাশের সড়কে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করছেন‌। আর রাস্তা খুলে দেওয়া হলেও গাড়ি নিয়ে পুলিশ টহল অব্যাহত রেখেছে।

এদিকে সড়ক বন্ধ করার পর সকাল থেকে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে সাংবাদিকেরা অবস্থান করতে পারলেও বেলা সোয়া দুইটার দিকে সাংবাদিকদের বের করে দেওয়া হয়। এরপর বেলা দুইটার দিকে নাইটিঙ্গেল মোড় হয়ে সিআইডির ক্রাইম সিনের দুটি গাড়ি ভেতরে প্রবেশ করে।

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে দায়িত্বরত গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা বাঙলার কাগজ ও ডনকে বলেন, বেলা তিনটার দিকে ক্রাইম সিন ইউনিট আলামত সংগ্রহের জন্য কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করেছে। ডগ স্কোয়াড দলের সদস্যরাও ভেতরে তল্লাশি চালিয়েছে।

এদিকে নয়াপল্টন এলাকায় দুই দিকের সড়ক উন্মুক্ত করে দেওয়ার পর ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়ক হয়ে একটি মিছিল নিয়ে যান। ‘বিএনপির গুন্ডারা হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘রাজপথে নামবি না পিঠের চামড়া থাকবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন তাঁরা।

তবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এবং এ এলাকায় অবস্থানরত পুলিশ সদস্যদের মিছিলকারীদের বাধা দিতে দেখা যায় নি। অবশ্য এর আগে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কিছুসংখ্যক নেতাকর্মী স্লোগান দিতে গেলে নাইটিঙ্গেল এলাকায় পুলিশ তাঁদের ধাওয়া দেয়। বেলা সোয়া দুইটা থেকে বেলা পৌনে তিনটা পর্যন্ত চারজনকে আটক করা হয়।

এদিকে নয়াপল্টন এলাকার দুইদিকের সড়ক খুলে দেওয়ার পর সরেজমিনে দেখা গেছে, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মূল ফটকে তালা নেই। এটি খোলা অবস্থায় রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য কার্যালয়ের সামনে ও আশপাশে অবস্থান করছেন। অন্যদিকে রাস্তা খুলে দেওয়ার পর এ পথে স্বাভাবিকভাবে যানচলাচল শুরু হয়েছে। বিএনপির কিছু সমর্থক দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে গণমাধ্যমের কাছে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। পুলিশ কিছুক্ষণ পরপর তাঁদের সরিয়ে দিচ্ছে।

রাস্তা খুলে দেওয়ার পর সরেজমিনে আরও দেখা গেছে, নয়াপল্টন এলাকার সড়কের দুই পাশের বৈদ্যুতিক খুঁটিতে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।