খেলাধুলার বিকাশে প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

খেলাধুলার বিকাশে প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, খেলাধুলার বিকাশে প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম হচ্ছে। তিনি বলেন, শুধু ফুটবল নয়, আমাদের নিজস্ব যেসব খেলাধুলা রয়েছে, সেখানে খুদে খেলোয়াড়রা সুযোগ পেতে পারে। এর মাধ্যমে কোমলমতিদের মেধা বিকাশের সুযোগ তৈরি হবে। শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট’ ও ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট’ এর পুরস্কার বিতরণীতে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। খবর বাসস’র।

সরকারপ্রধান বলেন, আমরা সরকারে এলেই ছেলেমেয়েদের খেলাধুলার প্রতি অনুরাগী করে তুলতে চেষ্টা করেছি। কারণ, খেলাধুলা মানুষের শারীরিক ও মানসিক শক্তির বিকাশ ঘটায়। শৃঙ্খলা, আনুগত্যের শিক্ষা দেয় ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে। খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি; বিশ্বের কাছে পরিচিত করতে পারি।

তিনি বলেন, সব ধরনের খেলাধুলার বিকাশে সরকার প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম করে দিচ্ছে। আমি চাই, আমাদের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা, শরীরচর্চা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিজেদের উপযুক্ত হিসেবে গড়ে তুলবে।

প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে এসে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত খেলা উপভোগ করেন। বঙ্গমাতা গোল্ডকাপের ফাইনালে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম টেপুরগাড়ি বি কে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩-১ গোলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে পরাজিত করে। এর আগে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ফাইনালে জামালপুরের মাদারগঞ্জ চরগোলাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২-১ গোলে রংপুরের মিঠাপুকুর তালিমগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়।

প্রধানমন্ত্রী দুটি টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত খেলায় বিজয়ী ও পরাজিত দলের খেলোয়াড়দের মাঝে ট্রফি, প্রাইজমানির চেকের রেপ্লিকা এবং খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত পুরস্কার তুলে দেন। টেপুরগাড়ি বি কে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাহমুদা আক্তার সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে গোল্ডেন বুট এবং একই বিদ্যালয়ের রিশা আক্তার সেরা খেলোয়াড়ের গোল্ডেন বল লাভ করেন।

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের চ্যাম্পিয়ন জামালপুরের মাদারগঞ্জ চরগোলাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাজ্জাদ হোসেন গোল্ডেন বুট ও আকাশ গোল্ডেন বল জয় করেন। পুরস্কার বিতরণী পর্বে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বক্তৃতা করেন।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১০ সাল থেকে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট এবং ২০১১ সাল থেকে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে আসছে। চার মাসব্যাপী এবারের দুটি টুর্নামেন্টে পুরুষ ও নারী বিভাগে ৬৫ হাজার ৩৫৪টি স্কুলের ১১ লাখ ১১ হাজার ১৮ ছাত্র এবং ৬৫ হাজার ৩৫৪টি স্কুলের ১১ লাখ ১১ হাজার ১৮ ছাত্রী ইউনিয়ন থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত অংশ নিয়েছে।

প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের মধ্যে এ খেলায় নৈপুণ্য প্রদর্শনের জন্য বক্তব্যের শুরুতেই খুদে খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। দুটি টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ দলকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি তিনি প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের মধ্যে খেলার কারণে কোমলমতিদের শারীরিক কোনও সমস্যা হয় কি না, তা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন বলে জানান।

বঙ্গবন্ধু থেকে শুরু করে তাঁর পরিবারের সদস্যদের ক্রীড়াঙ্গনে জড়িত থাকার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ফুটবল খেলা প্রেরণা জুগিয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের। দেশের ক্রীড়াঙ্গন অনেক দূর এগিয়েছে। ছেলেরাই শুধু নয়, মেয়েরাও বিদেশে পারদর্শিতা দেখাতে পারছে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের খুদে ফুটবলাররা একদিন বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে থেকে আরও বেশি সম্মান বয়ে আনবে।