প্রাক-বাজেট আলোচনায় ভ্যাট কমানোর কথা বললো বাজুস
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ ও ডন : জুয়েলারি শিল্পের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চেয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। একইসঙ্গে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে জুয়েলারি পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে আরোপিত ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ, অপরিশোধিত আকরিক সোনায় আরোপিত সিডি ৫ শতাংশের পরিবর্তে ১ শতাংশ ও আংশিক পরিশোধিত সোনার সিডি ১০ শতাংশের পরিবর্তে আইআরসিধারী এবং ভ্যাট কমপ্লায়েন্ট শিল্পের শুল্কহার ৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে বাজুস।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) রাজধানীর বসুন্ধরা সিটিতে বাজুস কার্যালয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট উপলক্ষে আয়োজিত প্রাক-বাজেট সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর। আরও উপস্থিত আছেন বাজুসের সহ-সভাপতি ও স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশনের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, বাজুসের সহ-সভাপতি রিপনুল হাসান, বাজুসের উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেল, বাজুসের সহ-সম্পাদক ও স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশনের ভাইস চেয়ারম্যান সমিত ঘোষ অপু, স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশনের সদস্য সচিব পবন কুমার আগারওয়াল।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বাংলাদেশের মহান স্থাপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা নির্মাণে ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ভিশন ২০৪১ সফল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাজুসের বর্তমান নেতৃত্ব বদ্ধপরিকর। বাজুস মনে করছে- আগামী দিনে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে জাগরণ তুলবে জুয়েলারি শিল্প। বর্তমানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ্যভাবে জুয়েলারি শিল্পে আনুমানিক ৪৪ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে। আগামীতে এই শিল্পে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সম্ভব। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে জুয়েলারি শিল্পে ভ্যালু এডিশন করে সোনার অলঙ্কার রপ্তানি সম্ভব। দুবাই যেমন সোনার ব্যবসার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে, তেমনি বাংলাদেশেও এই সম্ভাবনা রয়েছে। সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন ছিল জাতির পিতার। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে জুয়েলারি শিল্পে করমুক্ত সুবিধা চাই। সত্যিকারের সোনার বাংলাদেশ গড়তে জুয়েলারি শিল্পে সকল সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই।
দেশের প্রাচীন শিল্পের মধ্যে অন্যতম জুয়েলারি খাত। বর্তমানে চরম সঙ্কটে দিশেহারা এই জুয়েলারি শিল্পের জন্য প্রয়োজন সরকারের নীতি সহায়তা। অপার সম্ভাবনা থাকার পরও, সুষ্ঠু রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও নীতি সহায়তার অভাবে জুয়েলারি শিল্প এখন হুমকির মুখে পড়েছে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের ২০২২ সালের প্রতিবেদন মোতাবেক বিশ্ব বাজারে সোনার চাহিদা ছিল ৪ হাজার ৭৪০ টন। এরমধ্যে সোনার অলংকারের চাহিদা ২ হাজার ১৮৯ দশমিক ৮ টন।
বাংলাদেশে সোনার বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৪০ টন। তবে প্রকৃত চাহিদা নিরূপণে সরকারের সমীক্ষা প্রয়োজন। বৈধভাবে সোনার চাহিদা পূরণ করার ক্ষেত্রে বড় বাঁধা কাঁচামালের উচ্চমূল্য, অতিরিক্ত উৎপাদন ব্যয়, শিল্প সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতির উচ্চ আমদানি শুল্ক। বর্তমানে জুয়েলারি শিল্পের প্রায় সকল ধরনের পণ্য ও যন্ত্রপাতির আমদানি শুল্ক ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ। যা স্থানীয় অন্যান্য শিল্পে আরোপিত শুল্কের চেয়ে অনেক বেশি। এতে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে উচ্চ ভ্যাট হার ও অতিরিক্ত উৎপাদন খরচের কারণে ভোক্তা পর্যায়ে আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে দামের পার্থক্য হচ্ছে। এতে ক্রেতা হারাচ্ছেন জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা। আর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ছোট ছোট জুয়েলারী ব্যবসায়ী।