বন্যা : সিলেট ও সুনামগঞ্জে সব বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র, সিলেট রেলস্টেশন ও নেত্রকোনায় ট্রেন চলাচল বন্ধ।
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলা কাগজ; সিলেট এবং সংবাদদাতা, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা : বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় সিলেট ও সুনামগঞ্জে সকল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সিলেট রেলস্টেশন বন্ধ হয়ে গেছে এবং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে নেত্রকোনায় ট্রেন চলাচল।
সিলেট ও সুনামগঞ্জ : সিলেট রেলস্টেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মাইজগাঁও স্টেশন থেকে ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শনিবার (১৮ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিলেট রেলস্টেশনটি বন্ধ হয়ে যায়।
বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় দুপুর ১২টার দিকে সিলেট ও সুনামগঞ্জের সব বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। এতে দুই জেলায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
ভয়াবহ বন্যায় ভাসছে সিলেটসহ হাওরাঞ্চল। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবারও থইথই পানিতে পুরো জনপদ। পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষকে উদ্ধারে প্রশাসনের সঙ্গে মাঠে নেমেছেন সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যরাও।
নেত্রকোনায় ট্রেন চলাচল বন্ধ : ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের বন্যায় রেললাইন ডুবে যাওয়ায় নেত্রকোনার শ্যামগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে মোহনগঞ্জ রেলস্টেশন পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। শনিবার সকাল আটটার পর থেকে এই পথে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে মোহনগঞ্জ স্টেশনে হাওর এক্সপ্রেস ও বারহাট্টা স্টেশনে ২৬২ নম্বর লোকাল ডাউন ট্রেন আটকা পড়ে আছে বলেই জানিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
বারহাট্টা স্টেশনের স্টেশনমাস্টার গোলাম রব্বানী মুঠোফোনে বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, বন্যার পানিতে শ্যামগঞ্জ-মোহনগঞ্জ রেলপথের ইসলামপুর এলাকায় একটি বক্স সেতু ভেঙে গেছে।
‘এ ছাড়া কয়েকটি স্থানের রেললাইন বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। তাই ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। লোকাল ট্রেনটি বারহাট্টা থেকে ঘুরিয়ে ময়মনসিংহ পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
এদিকে নেত্রকোনায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। এর মধ্যে কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, মোহনগঞ্জ, মদন, খালিয়াজুরিসহ ৬টি উপজেলায় প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন। এসব উপজেলার প্রায় ৬ লাখ মানুষ পানিবন্দি। জেলার সঙ্গে কলমাকান্দা উপজেলার সড়কপথের যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, জেলার ৬টি উপজেলায় ১৮৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার মানুষ ঠাঁই নিয়েছে। বন্যাকবলিত প্রতিটি উপজেলায় মেডিক্যাল দল নিয়োজিত। জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন এনজিও, স্বেচ্ছাসেবীসহ প্রশাসনের সহায়তায় বন্যাকবলিত মানুষ ও তাঁদের গবাদিপশুদের নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হচ্ছে। বন্যাদুর্গত এলাকায় ইতিমধ্যে ২ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার দেওয়া হয়েছে।
‘এ ছাড়া বন্যাকবলিত ব্যক্তিদের জন্য ৬০ মেট্রিকটন জিআর চাল ও আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’