বাসস : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ (বৃহস্পতিবার : ৪ নভেম্বর) যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগকারীদের বেশ কয়েকটি লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করে বাংলাদেশের উন্নয়নযাত্রায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘...জ্বালানি, নবায়নযোগ্য শক্তি, জাহাজ নির্মাণ, অটোমোবাইল, হালকা প্রকৌশল, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, সমুদ্র অর্থনীতি, পর্যটন, জ্ঞানভিত্তিক হাইটেক শিল্প এবং আইসিটি খাত বিদেশি বিনিয়োগের অপেক্ষায় রয়েছে। ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীরা এরমধ্যে যে কোনও একটি এবং এর বাইরেও বেছে নিতে পারেন।’
শেখ হাসিনা ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীদেরসঙ্গে অংশীদারিত্বে বাংলাদেশে আসার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা সব সুযোগ পাবেন, আর কোনও বাধা থাকলে আমি তা দেখবো। প্রধানমন্ত্রী লন্ডনে কুইন এলিজাবেথ সেন্টারের চার্চিল হলে বাংলাদেশ বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন ২০২১: টেকসই প্রবৃদ্ধি অংশীদারিত্ব তৈরি ও রোড শো’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দিচ্ছিলেন। তিনি ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
এ ছাড়া প্রিন্স চার্লস এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের পূর্বে রেকর্ডকৃত ভিডিওবার্তা অনুষ্ঠানে প্রচার করা হয়। ব্রিটিশ বাণিজ্যনীতি প্রতিমন্ত্রী পেনি মর্ডান্টও ওই কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন।
শেখ হাসিনা একক অর্থনৈতিক অঞ্চলেরও প্রস্তাব প্রদান করেন। যেখানে একটি নির্দিষ্ট দেশের কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ করতে পারবে। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগকারীরা এই ধরনের একটি অঞ্চল নিজেদের জন্য নিতে পারেন।
‘প্রায় ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ২৮টি হাইটেক পার্ক বিদেশি ও দেশীয় বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, জনসংখ্যার সুফল এবং বিনিয়োগকারীরা যাতে প্রতিয়োগিতামূলক দামে দক্ষ মানবসম্পদ পায়, তা নিশ্চিতের উপর আমাদের দৃষ্টি রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটিসহ আমাদের সরকারি সংস্থাগুলো আপনাদের জন্য একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ ব্যবসায়িক পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।’
‘তাঁর (শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকার) সরকার ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোত্তম সম্ভাব্য সুফলের জন্য যথেষ্ট সুযোগ দেবেন।’
বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি প্রধান ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সফলভাবে কাজ করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যের ব্যবসায়ীদের আমন্ত্রণ জানিয়ে আরও বলেন, ‘আমি এইভাবে আরও কোম্পানিকে স্বাগত জানাতে চাই। যাতে তাঁরা এগিয়ে আসে এবং বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা জ্বালানি ও বিদ্যুৎ এবং রেল যোগাযোগসহ অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপকভাবে বিনিয়োগ করছি।’ এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার নিজস্ব অর্থায়নে উপেক্ষিত দক্ষিণাঞ্চলেরসঙ্গে দেশের অন্যান্য অংশের সংযোগ স্থাপনকারী রেলপথ বিশিষ্ট পদ্মাসেতু নির্মাণ করছে।
‘বাংলাদেশ খুব শিগগিরই মেট্রোরেল যুগে প্রবেশ করছে।’
‘শিল্পের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বৃদ্ধি এবং সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য বিদ্যুতের উৎপাদন ইতোমধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে। ২০৩০ সাল নাগাদ এই উৎপাদন লক্ষমাত্রা ৪০ হাজার মেগাওয়াট, ২০৪১ সাল নাগাদ ৬০ হাজার মেগাওয়াট নির্ধারণ করা হয়েছে।’
‘আমরা ক্রমাগত আমাদের আইনি এবং অবকাঠামো উন্নয়ন করছি। বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ ব্যবস্থা রয়েছে এবং বিদেশি বিনিয়োগ সংসদের আইন এবং দ্বিপাক্ষিক চুক্তির দ্বারা সুরক্ষিত।’
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, বাংলাদেশের আইসিটি খাত এখন দ্রুত বিকাশ লাভ করছে। ৬০টি দেশে এক বিলিয়ন ডলারের আইসিটি পণ্য রপ্তানি করছে। এটি ৫ গুণ বেড়ে ২০২৫ সাল নাগাদ ৫ বিলিয়ন ডলার দাঁড়াবে।
‘ফ্রিল্যান্স আইটি প্রফেশনালদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৬ লাখ। আইটি খাতে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ সঠিক জায়গা।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম আরএমজি রপ্তানিকারক দেশ।
‘সবজি উৎপাদনকারী হিসাবে তৃতীয় অবস্থানে, অভ্যন্তরীণ মৎস্য উৎপাদনে তৃতীয়, ইন্টারনেট ফ্রিল্যান্সিংয়ে তৃতীয় এবং ধান উৎপাদনে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।’