ডন প্রতিবেদন : মহামারিকালে ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি চাকরি প্রত্যাশিদের বয়সে ছাড় দিয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে চিঠি দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, যে সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও এর অধীনস্থ অধিদপ্তর/পরিদপ্তর/দপ্তর এবং সংবিধিবদ্ধ/স্বায়ত্বশাসিত/জাতীয়কৃত প্রতিষ্ঠানগুলো কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে বিভিন্ন ক্যাটাগরির সরকারি চাকরিতে (বিসিএস ব্যতিত) সরাসরি নিয়োগের লক্ষ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারে নি, সেই সকল প্রতিষ্ঠানকে আগামি ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকাশিতব্য বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থিদের সর্বোচ্চ বয়সসিমা ২০২০ সালের ২৫ মার্চ নির্ধারণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হল।’
এর ফলে বিসিএস ব্যতিত চাকরি প্রার্থিরা মহামারির কারণে বয়সের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২১ মাসের ছাড় পেলেন।
গত ১২ আগস্ট জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, মহামারিকালে ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি চাকরি প্রত্যাশিদের বয়সে ২১ মাস ছাড় দিতে একটি প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে।
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের প্রান্তসিমা ৩০ বছর থেকে বাড়ানোর দাবি বেশ কয়েক বছর ধরেই রাজপথে রয়েছে, তবে তা স্থায়িভাবে বাড়াতে রাজি নয় সরকার। এরমধ্যে মহামারিকালে নিয়োগ বন্ধ থাকায় যাঁরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন, তাঁদের জন্য গতবছর এক দফা সুযোগ দেওয়া হয়েছিলো। এক্ষেত্রে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ যাঁদের চাকরির বয়স শেষ হয়ে গিয়েছিলো, সেপ্টেম্বরেও তাঁদের সরকারি চাকরিতে আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়।
মহামারিররমধ্যেই এ বছর তিনটি বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরিক্ষা হলেও অন্য চাকরির প্রজ্ঞাপন খুব বেশি হয় নি। ফলে চাকরির বাজারের অবস্থাও খুব বেশি বদলায় নি।
এসব কারণে নতুন করে প্রস্তাব পাঠানো হয় বলে জানিয়েছিলেন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ।
তিনি বলেছিলেন, ‘গত বছরের ২৫ মার্চ যাঁদের বয়স ৩০ বছর হয়েছে, তাঁরা এই ছাড়ের আওতায় আসবেন। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাঁরা যেসব বিজ্ঞাপন দেবে, সেই বিজ্ঞাপনে উল্লেখ করবে, যাঁদের বয়স গত বছরের ২৫ মার্চ ৩০ বছর হয়েছে, তাঁরাও আবেদন করতে পারবে।’
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসিমা ৩০ বছর হলেও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ক্ষেত্রে ৩২ বছর।
প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদগুলোতে নিয়োগের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের।
গত বছর জুলাই মাসে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ি, সরকারি চাকরিতে ১৮ লাখ ২১ হাজার ২৮৪টি অনুমোদিত পদের বিপরিতে ১৪ লাখ ৩৩ হাজার ৯৪৬ জন কর্মরত ছিলেন, ফাঁকা ছিলো ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৩৩৮টি পদ। ফাঁকা এসব পদের সংখ্যা, ওই সময়ের মোট পদের ২১ দশমিক ২৭ শতাংশ।
মহামারিরমধ্যে সেসব পদ পূরণের কাজটি অনেকটাই থমকে আছে। গত বছর মার্চ থেকে মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটির সময় সব ধরনের নিয়োগ বন্ধ ছিলো। পরে কিছু প্রক্রিয়া শুরু হলেও সংখ্যায় তা সামান্য।