সিআইডি প্রধান : ৪ বছরে দেড় হাজার আত্মহত্যা ঠেকিয়েছে ৯৯৯। মহসিনের বিষয়টি বুঝতে পারে নি ফেসবুক।
ডন প্রতিবেদন : ৪ বছরে দেড় হাজার আত্মহত্যা ঠেকিয়েছে ৯৯৯। অপরদিকে লাইভে এসে পিস্তল ঠেকিয়ে নিজের মাথায় গুলি করে ব্যবসায়ী আবু মহসিন খান আত্মহত্যা করবেন, সেটি প্রথমে বুঝতে পারে নি ফেসবুক। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) ফেসবুক জানিয়েছে, লাইভের প্রথমে মহসিনের কথা স্বাভাবিক ছিলো, তিনি আত্মহত্যা করবেন, এমনটা তাঁদের মনে হয় নি। আজ বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আত্মহত্যা প্রতিরোধবিষয়ক এক সেমিনারে আত্মহত্যার বিষয়ে এসব কথা জানান সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মাহবুবুর রহমান। ৫৮ বছর বয়সী আবু মহসিন খান চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। থাকতেন ধানমন্ডি ৭ নম্বর রোডের ২৫ নম্বর ভবনে নিজের ফ্ল্যাটে। ২ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টার দিকে ওই বাসা থেকে ফেসবুক লাইভে এসে নিজের লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। এ খবর দ্রুতই ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সিআইডি প্রধান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মহসিন ফেসবুক লাইভে ছিলেন সাড়ে ১৬ মিনিটেরও বেশি। কেনো এ লাইভের ঘটনা সিআইডি জানতে পারলো না? সিআইডির সাইবার পুলিশ অফিসারদের নিয়ে আমি বসলাম। আমার দায়িত্ব কি নেই? আমি কি পারতাম না এটি প্রতিরোধ করতে? এ বিষয়ে কেউ আমাকে দোষারোপ করে নি। আমি নিজে দেখে নিজেকেই দোষারোপ করেছি।’ এ বিষয়ে ফেসবুকেরসঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে জানিয়ে সিআইডি প্রধান বলেন, ‘ফেসবুক আমাদের জানালো, লাইভের প্রথমে মহসিনের কথা স্বাভাবিক ছিলো, তিনি আত্মহত্যা করবেন, এমনটা তাদের মনে হয় নি। প্রথম দিকে তিনি যেভাবে কথা বলছিলেন, তাঁরা (ফেসবুক) বুঝতে পারে নি মহসিন আত্মহত্যা করবেন। প্রথমে মহসিন ফ্যামিলি লাইফ, পারসোনাল লাইফ, ব্যবসায়িক লাইফ নিয়ে কথা বলছিলেন। এ কারণে ফেসবুক আত্মহত্যার বিষয়টি বুঝতে পারে নি। লাইভের শেষের আড়াই মিনিট আগে ফেসবুক বুঝতে পারে, মহসিন আত্মহত্যা করবেন। ফেসবুককে অনুরোধ জানানো হয়েছে, যাতে তাঁরা আত্মহত্যা রোধে আমাদেরসঙ্গে কাজ করে।’ সিআইডি আত্মহত্যা রোধে কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মহসিন যখন লাইভ শুরু করেছিলেন, তখন কারা কারা লাইভ দেখছিলেন, আমরা সাইবার পুলিশ থেকে তাঁদের ট্র্যাক করার চেষ্টা করেছি। ট্র্যাক করার উদ্দেশ্য কাউকে দোষারোপ নয়, তাঁদের সচেতন করা। যাতে ভবিষ্যতে তাঁরা সচেতন হয়ে আমাদের জানাতে পারেন।’ ৪ বছরে দেড় হাজার আত্মহত্যা ঠেকিয়েছে ৯৯৯ : জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ চালুর পর থেকে গত প্রায় ৪ বছরে ফোনে সাড়া দিয়ে ১ হাজার ৪৯২টি আত্মহত্যার ঠেকানো সম্ভব হয়েছে বলে সেমিনারে জানিয়েছেন ৯৯৯-এর অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক তবারক উল্লাহ। তিনি জানান, এই ৪ বছরে ফোনকলে সাড়া দিয়ে ১ হাজার ১৩৫টি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ, যাঁরা আত্মহত্যা করেছেন। ২০১৭ সালে চালু হওয়া জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ বর্তমানে ৫শ জনবল নিয়ে কাজ করছে। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ৯৯৯-এ প্রায় সাড়ে ৩ কোটি কল এসেছে। এরমধ্যে ১ কোটি ১৫ লাখ ফোন কলের সেবা দেওয়া হয়েছে, যা মোট কলের ৩৩ শতাংশ। এরমধ্যে ৭৮ ভাগ পুলিশি সেবা, ৯ ভাগ ফায়ার সার্ভিস এবং ১১ ভাগ অ্যাম্বুলেন্স-সংক্রান্ত সেবা।