কর্মকর্তাদের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করলেন রনি।

কর্মকর্তাদের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করলেন রনি।

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : রেল কর্মকর্তাদের আশ্বাসের পর রেলের অব্যবস্থাপনা নিয়ে চলমান আন্দোলন স্থগিত করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। ১৯ দিন পর এ আন্দোলন স্থগিত করলেন রনি। আজ সোমবার (২৫ জুলাই) রাত ১০টার দিকে বাংলাদেশ রেলওয়ে ভবনের পদ্মা হলে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

এর আগে গত ১৩ জুন বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইট থেকে ঢাকা-রাজশাহী রুটের ট্রেনের আসন বুক করার চেষ্টা করেন মহিউদ্দিন রনি। কিন্তু মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা সংস্থা বিকাশ থেকে ভেরিফিকেশন কোড (যাচাইকরণ কোড) দিয়ে তাঁর পিন কোড (গোপন কোড) ছাড়াই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়। মহিউদ্দিন ট্রেনের কোনও আসন পান নি, এমনকি কেনো টাকা নেওয়া হলো, সে বিষয়ে কোনও ডকুমেন্টও (রশিদ) তাঁকে দেওয়া হয় নি। সেদিন কমলাপুর রেলস্টেশনে সার্ভার কক্ষে অভিযোগ জানালে, সেখান থেকে তাঁকে ‘সিস্টেম ফল’ করার কথা বলা হয় এবং ১৫ দিনের মধ্যে টাকা না পেলে আবার যেতে বলা হয়। কিন্তু ওই মুহূর্তে ওই কক্ষে থাকা কম্পিউটার অপারেটর তাঁরই ৬৮০ টাকার আসন ১ হাজার ২ শ টাকায় বিক্রি করেন বলে অভিযোগ রনির।

পরে ঈদের আগে ৭ জুলাই থেকে অবস্থান কর্মসূচিতে যান রনি। একটানা আজ সোমবার পর্যন্ত অবস্থান করেন কমলাপুর রেলস্টেশনে। তবে এ সময়ের মধ্যে রাতে গিয়ে তিনি ক্যাম্পাসে হলে বিশ্রাম নিতেন। বাদবাকি সময় প্রতিবাদ এবং গান ও বক্তব্য দিয়ে সময় কেটেছে তাঁর। রনির অবস্থান কর্মসূচির এ সময়ের মধ্যে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর তাঁরই অভিযোগের প্রেক্ষিতে সহজ ডটকমের ব্যাপারে শুনানি করে। ওই শুনানিতে রনির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটিকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। একইসঙ্গে সহজ ডটকম এবং রেলের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের এক হাত নিয়েছেন আদালত। 

এদিকে রনি তাঁর অবস্থান কর্মসূচিকালে রেল ভবন বরাবর মার্চও করেছেন।

রনি যে ৬ দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন, সেগুলো হলো :

১. টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে সহজ ডটকম কর্তৃক যাত্রী হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। হয়রানির ঘটনায় তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

২. যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধ করতে হবে।

৩. অনলাইন-অফলাইনে টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে সর্বসাধারণের সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

৪. যাত্রী চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ রেলের অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

৫. ট্রেনের টিকিট পরীক্ষক ও তত্ত্বাবধায়কসহ অন্যান্য দায়িত্বশীলদের কর্মকাণ্ড সার্বক্ষণিক মনিটর, শক্তিশালী তথ্য সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে রেল সেবার মান বৃদ্ধি করতে হবে।

৬. ট্রেনে ন্যায্য দামে খাবার বিক্রি, বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।