গণপরিবহনে হয়রানির শিকার ৬৩ শতাংশ নারী।
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : রাজধানীতে জীবিকা নির্বাহ, পড়াশোনা অথবা অন্য কাজে বাইরে যাতায়াতের সময় প্রায় ৬৩ শতাংশ নারী নানা হয়রানির শিকার হন বলেই আঁচল ফাউন্ডেশনের এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
শুক্রবার (৩ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে ‘ঢাকা শহরে গণপরিবহনে হয়রানি : কিশোরী ও তরুণীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব’ শীর্ষক গবেষণাটির ফলাফল তুলে ধরেছে ফাউন্ডেশনটি।
১৩ থেকে ৩৫ বছরের ৮০৫ জন তরুণী ও নারীর অংশগ্রহণে গবেষণাটি পরিচালিত হয়।
এতে দেখা যায়, অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে গত ছয় মাসে ৬৩ দশমিক ৪ শতাংশ কিশোরী ও তরুণী গণপরিবহনে বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ৪৬ দশমিক ৫ শতাংশ যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ বুলিং, ১৫ দশমিক ২ শতাংশ সামাজিক বৈষম্য, ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ লিঙ্গবৈষম্য এবং ৮ দশমিক ২ শতাংশ বডি শেমিংয়ের মতো হয়রানির মধ্য দিয়ে গিয়েছেন।
গণপরিবহনে সাধারণ যাত্রীরা যৌন হয়রানি করায় এগিয়ে। যৌন নিপীড়নের শিকার নারীদের ৭৫ শতাংশ জানিয়েছেন, তাঁদের অন্য যাত্রীদের মাধ্যমে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। ২০ দশমিক ৪ শতাংশ জানিয়েছেন, তাঁদের হেলপার কর্তৃক এই ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
এ ছাড়া ৩ শতাংশ হকারের মাধ্যমে এবং ১ দশমিক ৬ শতাংশ চালকের মাধ্যমে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন বলেই সমীক্ষায় উঠে এসেছে। গণপরিবহনকে অনিরাপদ করে তোলার পেছনে সবচেয়ে দায়ী হিসেবে সাধারণ যাত্রীদের কথাই উঠে এসেছে।
‘গণপরিবহনে কোন ধরনের যৌন হয়রানির শিকার হতে হয়েছে’, সে বিষয়ে ১১ দশমিক ৯ শতাংশ অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন, গণপরিবহনে চলাচলের সময় তাঁদের আপত্তিকরভাবে স্পর্শ করা হয়েছে। ৩০ দশমিক ৮ শতাংশ কিশোরী ও তরুণী জানিয়েছেন, গণপরিবহনে যথেষ্ট জায়গা থাকা সত্ত্বেও অন্য যাত্রীরা ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁদের গা ঘেঁষে দাঁড়ায়। ইচ্ছাকৃতভাবে হালকাভাবে স্পর্শ করে গেছেন ১৭ দশমিক ৯ শতাংশকে।
এ ছাড়া ১৪ দশমিক ২ শতাংশ ইচ্ছাকৃতভাবে ধাক্কার শিকার হয়েছেন। ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ কিশোরী ও তরুণী জানিয়েছেন, তাঁরা বাজে মন্তব্যের শিকার হয়েছেন।
হয়রানি প্রতিরোধে আঁচল ফাউন্ডেশন থেকে কয়েকটি প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রস্তাবগুলো হলো : গণপরিবহনে যৌন নিপীড়িত নারীর তাৎক্ষণিক প্রতিবাদে উৎসাহী করতে বিশেষ প্রচারণা চালানো; পরিবহনগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন; সিটের পাশে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে সতর্কতামূলক বিভিন্ন লিফলেট টাঙানো; সংরক্ষিত আসন সংখ্যা জরুরিভিত্তিতে বাড়ানো; নারীদের জন্য আলাদা পরিবহনের ব্যবস্থা করা।