গোপালগঞ্জে কাদের : ফখরুল সাহেব, আপনাদের মিটিংয়ে কেউ ডিস্টার্ব করবে না
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলার কাগজ ও ডন; গোপালগঞ্জ : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘ফখরুলের মুখে মধু, অন্তরে বিষ। অন্তরে বিষ ছাড়া আর কিছু আছে? ফখরুল সাহেব, অনুমতি চেয়েছেন, অনুমতি দিয়েছে, আপনাদের মিটিংয়ে কেউ ডিস্টার্ব (বিরক্ত) করবে না। আমরা রাজশাহীতেও বলে দিয়েছি, পরিবহন ধর্মঘট যেনো না করে। ঢাকাতেও পরিবহন ধর্মঘট হবে না, নেত্রী বলে দিয়েছেন। ঠিক আছে? খেলা হবে। এরপরও যদি বাড়াবাড়ি করেন, লাফালাফি করেন, আগুন নিয়ে নামেন, এরপরও যদি লাঠির সঙ্গে বাংলাদেশের পতাকা লাগিয়ে মাঠে নামেন, তাহলে খবর আছে।’
বৃহস্পতিবার (পহেলা ডিসেম্বর) দুপুরে গোপালগঞ্জে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। দুপুর ১২টার দিকে শহরের পৌর পার্ক মাঠে এ সম্মেলন শুরু হয়েছে। গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী এমদাদুল হকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত হন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারেক রহমান ওয়ান ইলেভেনের জরুরি সরকারের কাছে মুচলেকা দিয়ে রাজনীতি থেকে বিদায় নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি রাজনীতি থেকে বিদায় নেওয়ার অঙ্গীকার করে লন্ডনে পাড়ি জমিয়েছেন। অর্থ পাচার করে এফবিআইয়ের কাছে ধরা খেয়েছেন। এফবিআই ঢাকার আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছে সিঙ্গাপুরে অনেক অর্থ পাওয়া গেছে। নগদ কিছু আমরা ফেরতও পেয়েছি। তারেক আর কোকো সেই টাকা পাচারকারী। তারেক রহমান লন্ডনে বসে বসে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন। তারেক রহমান আর হাওয়া ভবনের অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে খেলা হবে। সারা বাংলাদেশের কত টাকা পাচার করা হয়েছে, সেটা শেখ হাসিনা খতিয়ে দেখছেন। এই টাকা উদ্ধার করা হবে। টাকা পাচারকারী তারেক রহমানসহ যাঁরাই আছেন, প্রত্যেকের টাকাই উদ্ধার করা হবে।’
দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন,বাংলাদেশ এখনো অনেক রাষ্ট্র থেকে ভালো আছে। শেখ হাসিনা যতো দিন আছেন, বাংলাদেশ ততো দিন ভালো থাকবে। শেখ হাসিনার সরকার আরেকবার দরকার।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, সংরক্ষিত নারী আসন-২৫-এর সংসদ সদস্য নার্গিস রহমান ও বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দীন।
এর আগে সকালে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে দেখা গেছে। মাঠে বসার জন্য পাঁচ হাজার চেয়ার রাখা হয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাঠের সব কটি চেয়ার পূর্ণ হয়ে যায়। সম্মেলনে আসা নেতাকর্মীদের বেশিরভাগই হলুদ, সাদা, গোলাপীসহ বিভিন্ন রঙের টি-শার্ট আর টুপি পরে এসেছেন। সকাল ১০টার দিকে গোপালগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মাদ ফারুক খান সম্মেলনস্থলে আসেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় সাড়ে সাত বছর পর গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হচ্ছে। এ উপলক্ষে পুরো শহর সেজেছে নতুন সাজে। সড়কগুলোয় নির্মাণ করা হয়েছে তোরণ। সব জায়গায় শোভা পাচ্ছে ব্যানার-পোস্টার। ২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর সর্বশেষ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে চৌধুরী এমদাদুল হককে সভাপতি ও মাহাবুব আলী খানকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর এক বছর পর ৭১ সদস্যবিশিষ্ট জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়।