বিক্ষোভের মধ্যে চবির চারুকলা বন্ধ ঘোষণা : শিক্ষার্থীদের ছাড়তে হবে হোস্টেল

বিক্ষোভের মধ্যে চবির চারুকলা বন্ধ ঘোষণা : শিক্ষার্থীদের ছাড়তে হবে হোস্টেল

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলার কাগজ; চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটে সশরীর শ্রেণি কার্যক্রম এক মাসের জন্য বন্ধ করা হয়েছে।

এ ছাড়া বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার মধ্যে শিল্পী রশিদ চৌধুরী হোস্টেলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের অবস্থান ত্যাগ করতে বলা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট বিকেল পাঁচটার দিকে এ সিদ্ধান্ত দেয়। এর আগে বেলা তিনটায় চারুকলায় চলমান সমস্যার সমাধানে করণীয় নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করেছিলেন উপাচার্য শিরীণ আখতার। 

জানতে চাইলে সিন্ডিকেট সদস্য মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম বাঙলার কাগজ ও ডনকে বলেন, চারুকলা ইনস্টিটিউটকে এখনই ক্যাম্পাসে আনা হচ্ছে না। শিক্ষার্থী ভবন সংস্কারের যে দাবি করা হয়েছিল, তা পূরণ করার জন্য এক মাস সময় প্রয়োজন। তাই সংস্কারকাজ চলা অবস্থায় ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম সশরীর বন্ধ থাকবে। এ এক মাস অনলাইনে ক্লাস নেওয়া হবে। আজ রাত ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হোস্টেল ছাড়তে হবে।

চারুকলা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনার দাবিতে দ্বিতীয় দফায় আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। আজও সকাল থেকে ফটকে তালা দিয়ে ইনস্টিটিউট অবরোধ করে রেখেছিলেন তাঁরা। শিক্ষার্থীরা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনার এক দফা দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করছেন।

জানতে চাইলে আন্দোলনে থাকা চারুকলা ইনস্টিটিউটের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ শহীদ বাঙলার কাগজ ও ডনকে বলেন, ‘আমাদের দাবি মূল ক্যাম্পাসে ফেরার, ভবন সংস্কারের নয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটি মর্মান্তিক ও দুঃখজনক।’

কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের পরে এখন কোনও কর্মসূচি পালন করবেন কি না, জানতে চাইলে মোহাম্মদ শহীদ বাঙলার কাগজ ও ডনকে বলেন, এ ব্যাপারে শিক্ষার্থীরা পাঁচটার দিকে বৈঠকে বসেছেন। বৈঠক শেষে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

শ্রেণিকক্ষে পলেস্তারা খসে পড়ার জেরে ২২ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা গত ২ নভেম্বর ক্লাস বর্জনসহ অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছিলেন। একপর্যায়ে ইনস্টিটিউট নগর থেকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নিতে এক দফা দাবি তোলেন তাঁরা। প্রশাসন দাবি না মানায় ১৬ নভেম্বর ইনস্টিটিউটের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন থেকে অচল ছিল ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম। পরে ২৩ জানুয়ারি থেকে কর্তৃপক্ষকে সাত দিনের সময় বেঁধে দিয়ে শর্ত সাপেক্ষে ক্লাসে ফিরেছিলেন শিক্ষার্থীরা। এরপর গত মঙ্গলবার থেকে আবার অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় ইনস্টিটিউটে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডি।

চবিতে চারুকলা বিভাগের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭০ সালে। ২০১০ সালে নগরের সরকারি চারুকলা কলেজের সঙ্গে এক হয়ে গঠিত হয় চারুকলা ইনস্টিটিউট। ইনস্টিটিউটের অবস্থান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে নগরের মেহেদীবাগের বাদশা মিয়া সড়কে। বর্তমানে ইনস্টিটিউটে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৫৩।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, ইনস্টিটিউটের শ্রেণিকক্ষগুলোর অবস্থা জীর্ণশীর্ণ। ছাত্রীদের জন্য মাত্র একটি শৌচাগার আছে। আবাসনসুবিধা পান মাত্র ১৩ শিক্ষার্থী। গ্রন্থাগারে বই নেই। ডাইনিংয়ে খাবারের ব্যবস্থা নেই। পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকায় তাঁরা মূল ক্যাম্পাসে ফিরে যেতে চান।