ভারতীয় সাংবাদিকদের সফর সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নেবে : তথ্যমন্ত্রী

ভারতীয় সাংবাদিকদের সফর সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নেবে : তথ্যমন্ত্রী

বাসস : তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্‌মুদ বলেছেন, ভারতীয় সাংবাদিকদের সফর দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নেবে। তিনি বলেন, ‘ভারতীয় সাংবাদিকদের বাংলাদেশ সফর যেমন দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করবে, তেমনি মানুষে মানুষে আত্মিক সম্পর্ককে আরও গভীরতর করতেও অত্যন্ত ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

মন্ত্রী রোববার (৮ জানুয়ারি) অপরাহ্নে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে বাংলাদেশ সফররত ভারতীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে কলকাতা থেকে ২৫ জন এবং আসাম ও গৌহাটি থেকে ৯ জন সাংবাদিক ৬ থেকে ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশ সফরের অংশ হিসেবে রোববার চট্টগ্রাম যান। এ দিন চট্টগ্রামের সন্তান তথ্যমন্ত্রী হাছান ভারতীয় সাংবাদিকদের নিয়ে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু টানেল ও ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের আত্মাহুতির স্থান পাহাড়তলীতে ইউরোপিয়ান ক্লাব পরিদর্শন করেন।

ড. হাছান বলেন, ‘এখন আর আকাশ থেকে বাংলাদেশে কুঁড়েঘর দেখা যায় না, বাস্তবিক অর্থে কুঁড়েঘর হারিয়ে গেছে, এটিই বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। গত ১৪ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দু দেশের সুসর্ম্পকের নতুন মাত্রা আমাদের এই বদলে যাওয়ার উন্নয়ন অভিযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছে।’ 

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, আমরা দু দেশের নাগরিক বটে, কিন্তু আমরা একই পাখির কলতান শুনি, একই নদীর অববাহিকায় আমরা বেড়ে উঠি। একই মেঘ আমাদের এখানে বরিষণ করে। কাঁটাতারের বেড়া আমাদের এই বন্ধন, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, কৃষ্টি, ভাষা এবং সর্বোপরি আমাদের ভালোবাসাকে বিভক্ত করতে পারে নি।

হাজার হাজার বছর ধরে আমাদের এই আত্মিক সম্পর্ক রক্তের বন্ধনে একাত্ম হয়েছে একাত্তর সালে, যখন আমাদের মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে ভারতের সেনাবাহিনী রক্ত ঝরিয়েছে- এ কথা উল্লেখ করে হাছান মাহ্‌মুদ বলেন, আমাদের কষ্টের সঙ্গে ভারতের মানুষও কষ্ট স্বীকার করেছে। এক কোটিরও বেশি মানুষ ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেছে। যতোই কাঁটাতারের বেড়া কিংবা অন্য কোনও আইন-কানুন হোক না কেনো, রক্তের অক্ষরে লেখা হৃদয়ের এই বন্ধন কখনো বিভক্ত করা যাবে না।

তিনি বলেন, সাংবাদিকরা সমাজের তৃতীয় নয়ন খুলে দেয়, মানুষের আত্মিক খোরাক যোগায়, অনুন্মোচিত বিষয়কে উম্মোচিত করে। সমাজ এবং রাষ্ট্রকে সঠিক পথে প্রবাহিত করার ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা ভূমিকা রাখে। এখান থেকে গিয়ে যখন আপনারা কলম ধরবেন কিংবা টেলিভিশনে রিপোর্টিং হবে, তখন দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীরতর হবে। আমাদের দেশের বদলে যাবার গল্পটা ভারতবাসী জানবে, বিশ্ববাসী জানবে।

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব আয়োজিত ও প্রেসক্লাবের সভাপতি সালাহউদ্দিন মোহাম্মদ রেজার সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক শহীদুল্লাহ শাহরিয়ারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বশর মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, কলকাতা প্রেসক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিষ সুর, সম্পাদক কিংশুক প্রামাণিক ও আসামের সিনিয়র সাংবাদিক মনোজ কুমার গোস্বামী।

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক স্বাগত বক্তব্য ও জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ, সাবেক সভাপতি আলী আব্বাস, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি শহীদুল আলম, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি তপন চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলাম প্রমুখ আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন।