রামপালের জন্য এলো পরীক্ষামূলক চালানের ৩৬ হাজার টন কয়লা।
নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঙলা কাগজ; বাগেরহাট : বাগেরহাটের রামপালে নির্মাণাধীন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আনা প্রথম পরীক্ষামূলক চালানের কয়লা মোংলা বন্দরে পৌঁছেছে। শুক্রবার (৫ আগস্ট) সকাল থেকে আমদানি করা ৩৬ হাজার টন কয়লা লাইটার জাহাজে করে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে নেওয়া শুরু হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) রাতে বাংলাদেশি পতাকাবাহী এম ভি আকিজ হেরিটেজ নামের একটি জাহাজ ওই কয়লা নিয়ে মোংলা সমুদ্রবন্দরের হাড়বাড়িয়ার ১১ নম্বর বয়ায় এসে নোঙর করে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) ক্যাপ্টেন আবদুল ওয়াদুদ তরফদার বাঙলা কাগজ ও ডনকে জানান, গত ৩১ জুলাই এমভি আকিজ হেরিটেজ নামের জাহাজটি ৫৪ হাজার ৬৫০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়। সেখানে ১৮ হাজার ৬৫০ টন কয়লা খালাস করে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আনা ৩৬ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে মোংলা বন্দরের হাড়বাড়িয়া আসে। আজ (শুক্রবার) সকাল থেকে এই কয়লা খালাস শুরু হয়েছে।
বন্দর ও বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিএফপিসিআইএল) জন্য বসুন্ধরা মাল্টি ট্রেডিং লিমিটেডের (বসুন্ধরা গ্রুপ) সঙ্গে কয়লা কেনার চুক্তি হয়। চুক্তিতে মোট ৩ লাখ টন কয়লা কেনা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম চালানে আসবে ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা। ইন্দোনেশিয়া থেকে এই কয়লা আমদানি করা হচ্ছে। ২০ জুলাই ইন্দোনেশিয়ার তানজুম ক্যাম্ফা বন্দর থেকে কয়লা বোঝাই করে এই চালানের প্রথম জাহাজটি ছেড়ে আসে। জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট টগি শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিকস লিমিটেডের (বসুন্ধরা গ্রুপ) ব্যবস্থাপক খন্দকার রিয়াজুল হক বিষয়টি বাঙলা কাগজ ও ডনকে নিশ্চিত করেছেন।
বিএফপিসিআইএলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) আনোয়ারুল আজীম বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, ‘কয়লা আসা শুরু হয়েছে। জ্বালানি পাওয়াতে চলতি মাসেই আমাদের প্রথম ইউনিটের পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হবে। আর অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট পুরোপুরি উৎপাদনে যাবে।’
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় ইউনিটটিও উৎপাদনে যাবে জানিয়ে তিনি বলেন, সার্বিকভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৮০ ভাগ কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহারে বিদ্যুৎ উৎপাদনে এখানে জ্বালানি (কয়লা) কম লাগবে।
১৩২০ মেগাওয়াটের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার সাপমারি এলাকায় অবস্থিত। ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০১০ সালে ভূমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। ২০১২ সালে শুরু হয় আনুষ্ঠানিক নির্মাণকাজ। এখান থেকে ২ ইউনিটে ৬৬০ মেগাওয়াট করে ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা রয়েছে।