এবার কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ৩০,৯১১ কোটি টাকা।

এবার কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ৩০,৯১১ কোটি টাকা।

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। কোভিড মহামারি এবং সাম্প্রতিক বিশ্ব পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে কৃষির গুরুত্ব অধিকভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই কৃষি খাতে প্রয়োজনীয় অর্থায়নের মাধ্যমে সহায়তা করতে বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, টেকসই উন্নয়নের নির্ধারিত লক্ষ্যের প্রথম ও প্রধান ৩টি লক্ষ্য তথা দারিদ্র্য বিমোচন, ক্ষুধা মুক্তি এবং সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণের উদ্দেশে পল্লী অঞ্চলে কৃষিঋণ প্রবাহ বৃদ্ধি করে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের  কৃষিঋণ বিভাগ কর্তৃক ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচির উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হলো :

চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ৩০ হাজার ৯১১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণপূর্বক বাংলাদেশ ব্যাংকের বার্ষিক কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা শেষ হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকার তুলনায় ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেশি। কৃষি ও পল্লী ঋণের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনায় চলতি অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত খাতের ব্যাংকগুলোর জন্য ১১ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা এবং বেসরকারি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য ১৯ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। 

গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ব্যাংকগুলো মোট ২৮ হাজার ৮৩৪ কোটি ২১ লাখ কোটি টাকার কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ করেছে; যা লক্ষ্যমাত্রা ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকার প্রায় ১০১ দশমিক ৫৬ শতাংশ। গেলো অর্থবছরে মোট ৩৩ লাখ ৪ হাজার ৮১১ জন ঋণ গ্রহীতা কৃষি ও পল্লী ঋণ পেয়েছেন, যার মধ্যে ব্যাংকগুলো নিজস্ব নেটওয়ার্ক ও এমএফআই লিঙ্কেজের মাধ্যমে ১৭ লাখ ৯৭ হাজার ৫২ জন নারী ১০ হাজার ৮২৯ কোটি ৩৯ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ পেয়েছেন। ওই অর্থবছরে ২৪ লাখ ৯৯ হাজার ৯৪৫ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষী বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ২০ হাজার ১৮২ কোটি ৩০ লাখ টাকা এবং চর ও হাওর প্রভৃতি অনগ্রসর এলাকার ৪ হাজার ৭৩ জন কৃষক ১৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ পেয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক আরও বলছে, পরিবেশবান্ধব ও টেকসই কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলে জনসাধারণের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং কৃষকদের নিকট কৃষিঋণ সহজলভ্য করার লক্ষ্যে বর্তমান নীতিমালা ও কর্মসূচিতে বেশকিছু সময়োপযোগী বিষয় সংযোজিত হয়েছে। এ নীতিমালার উল্লেখযোগ্য নতুন সংযোজিত বিষয়গুলো হলো :
❏ প্রাণিসম্পদ খাতের আওতায় হাঁস পালনের জন্য ঋণ নিয়মাচার সংযোজন;  
❏ চিয়া বীজ, ত্বীন ফল, সুগারবীট চাষের জন্য ঋণ নিয়মাচার সংযোজন;
❏ ভিয়েতনামী হাইব্রিড নারিকেল, কফি ও সুইট কর্ণ চাষের ঋণ নিয়মাচার সংযোজন;
❏ সামুদ্রিক শৈবাল চাষের জন্য ঋণ নিয়মাচার সংযোজন;
❏ মৎস্য খাতের আওতায় গলদা চিংড়ি চাষের ঋণ নিয়মাচার সংযোজন;
❏ সহজে অধিকসংখ্যক কৃষককে কৃষিঋণ প্রদানের লক্ষ্যে ব্যাংকগুলো কর্তৃক দলবদ্ধভাবে কৃষিঋণ বিতরণের পদ্ধতি সংযোজন এবং
❏ একর প্রতি ফসল উৎপাদনের ঋণ নিয়মাচার বৃদ্ধি করা।

আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রণীত চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচি কৃষি খাতে অর্থায়নের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর জন্য সহায়ক হবে। পাশাপাশি কৃষি খাত ও গ্রামীণ উন্নয়নে নীতিমালাটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে মর্মে আশা করা যাচ্ছে।