গ্রেনেড হামলায় নিহত ও আহতদের প্রতি সমবেদনা : দেশে আর জঙ্গিবাদের উত্থান না ঘটুক।

গ্রেনেড হামলায় নিহত ও আহতদের প্রতি সমবেদনা : দেশে আর জঙ্গিবাদের উত্থান না ঘটুক।

কালাম আঝাদ’র কলাম : দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটলে কী পরিমাণ ভোগান্তিতে পড়তে হয় বা কতোটা ক্ষতি হয়; তা আওয়ামী লীগ, সংস্কৃতিমনা বা মুক্তিবুদ্ধির মানুষের চেয়ে বেশি কেউ আর বলতে পারবেন না। জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটলে সাধারণ মানুষকেও পথে-ঘাটে প্রাণ দিতে হয়। জঙ্গিবাদ ধ্বংস করে দেয় সবকিছু; একটি সভ্য দেশকে অসভ্য করে তুলতে পারে। একটি দেশের সভ্যতা-সংস্কৃতি সৃষ্টি হতে অনেক সময়ের প্রয়োজন। কিন্তু এই জঙ্গিবাদ ধ্বংস করে দিতে পারে সে দেশের কৃষ্টি-কালচারকে। ধ্বংস করে দিতে পারে পুরো দেশটাকেই। সুতরাং জঙ্গিবাদ এখন একটি বৈশ্বিক সমস্যা। আর সেজন্যই আমরা আন্তর্জাতিকভাবে তা নির্মূলে কাজ করছি।

দেশের মানুষ জানে, বিএনপি-জামায়াতের আমলে দেশে কী পরিমাণে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছিলো। আর বিএনপি জঙ্গিদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা করতো একটি কারণেই, সেটি হলো আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে। ফলে জঙ্গিদের বিভিন্ন আবদারও শুনতে হতো বিএনপি-জামায়াতকে। যার কারণে বিভিন্ন জায়গায় বোমা হামলা করতে পারতো এই জঙ্গিরা। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সরকার কখনোই জঙ্গিবাদকে সমর্থন করে না বলেই মানুষ এখনও শান্তিতে ঘুমাতে পারে। দেশ জঙ্গি হামলামুক্ত। আর কোনও ধরনের কোনও জঙ্গিবাদের খবর পেলেই আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে তাদেরকে নির্মূলে কাজ করে।

একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আমার মামা রমিজ উদ্দীন সরকার আহত হয়েছিলেন। ৩ দফায় তিনি শেখ হাসিনার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা করেও পেয়েছেন। মামা অবসর নিয়েছেন পরিদর্শক হিসেবে। ওই সময় মামা শেখ হাসিনার দেহরক্ষীর দায়িত্ব পালন করছিলেন। 

তো আমি একজন পুলিশ পরিবারের সদস্য হিসেবে (আমার বাবা শহিদুল ইসলাম পুলিশে ছিলেন, আর দুই মামার মধ্যে গ্রেনেড হামলায় আহত রমিজ উদ্দীন সরকার এখন অবসরে, পাশাপাশি আরেক মামা মফিজ উদ্দীন সরকার এখনও পুলিশে কর্মরত) দেখেছি, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে একজন পুলিশ সদস্যকে কী পরিমাণ পরিশ্রম করতে হয়। (সেজন্য আমার গাড়িও যদি একজন ট্রাফিক পুলিশ ধরেন এবং কনস্টেবল হয়েও কাগজপত্র পরীক্ষা করতে চান; এরপরও আমি কিছুই বলি না)

সার্বিকভাবে আমি আমার মামার স্প্লিন্টারের যন্ত্রণা দেখেছি কাছ থেকে। মামার মুখের মধ্যে এখনও স্লিন্টার আছে এবং গালে দাগ দেখে মামা দাঁড়ি রেখে দিয়েছেন। উনার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এখনও স্প্লিন্টার রয়েছে। উনার যন্ত্রণা দেখে এবং অপারেশন করেও এগুলো বের করতে না পারার কষ্ট দেখে আমি ভাবি, দেশের আরও যাঁরা স্প্লিন্টারের আঘাত বয়ে বেড়াচ্ছেন; তাঁদেরও এখনও মাঝেমধ্যে অনেক কষ্ট হয়।

একুশে আগস্টের দিনে গ্রেনেড হামলায় নিহত এবং আহত সকল মানুষের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

ভালো থাকুক প্রতিটি মানুষ, প্রতিটি প্রাণী, প্রতিটি বস্তু এবং অবস্তু।

সকলের মঙ্গল কামনা করছি।

লেখক : সম্পাদক ও প্রকাশক, বাঙলা কাগজ ও আওয়ার ডন।