গৃহহীন সুবর্ণা’র ভাগ্যে জোটে নি প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর।

গৃহহীন সুবর্ণা’র ভাগ্যে জোটে নি প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর।

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলার কাগজ; রাম জোয়ার্দার, কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) : ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার ব্রিজঘাট হালদার পাড়ার বাসিন্দা হত দরিদ্র বিধবা সুবর্ণা কর্মকার। কিন্তু তাঁর ভাগ্যে আজও জোটে নি গৃহহীন হতদরিদ্রদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার। এলাকার জনপ্রতিনিধি এবং উপজেলার সরকারি কর্মকর্তা- সকলের কাছে দুই বছর ধরে গিয়েও তাঁর কপালে জোটে নি একটি নিরাপদ আশ্রয়।

আইডি কার্ড অনুযায়ী, সুবর্ণা কর্মকারের বয়স ৭৫ বছর। কাজ করার মতো শক্তি-সামর্থ্য কোনোটাই তাঁর নেই। স্বামী নিমাই কর্মকার ১২ বছর আগেই গত হয়েছেন। আর ৩ ছেলে জীবিত থাকলেও কোনও ছেলে তাঁর দেখাশোনা করে না। স্বামীর রেখে যাওয়া ব্রিজঘাট হালদার পাড়ায় ৩ শতক জমিতে জীর্ণ একটি কুটিরে থাকেন সুবর্ণা কমকার।

খোঁজ-খবর নেবার পর সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জরাজীর্ণ টিনের চালার নিচে বসে আছেন বৃদ্ধা। সামনে যেতেই তিনি করুন সুরে বললেন, ‘বাবা আমার একটা সরকারি ঘর করে দিবা। আমি খুব কষ্টে আছি।’

‘বৃষ্টির সময় ঘরে থাকা যায় না, টিন সব ফুটো হয়ে গেছে।’

‘যেদিন রাতে ঝড় বৃষ্টি হয়, সেদিন আমি সারারাত ঘুমাতে পারি না।’

‘তখন বসেই রাত কাটতে হয়। ঘরের জন্য কত মেম্বার-চেয়ারম্যানের কাছে গেলাম। উপজেলা অফিসে গেলাম- কেউ আমার একটা ঘরের ব্যবস্থা করে দিলো না। সবাই বলে সময় হলেই হবে। আর কত সময় হলে আমি ঘর পাবো বাবা!’

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমার থেকেও যাঁরা অনেক ভালো আছে। তাঁরা (ঘর) পেলো; শুধু আমি পেলাম না।’

‘রাতে যদি একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারতাম, তাহলে আর কোনও কষ্ট থাকতো না।’

‘৩ ছেলে থাকলেও কেউ আমার খোঁজ খবর নেয় না।’

কথাগুলো বলতে বলতে হাত দিয়ে চোখের জল মুছেন তিনি। এভাবে চোখের জল মোছা তাঁর শুধু আজকের ঘটনা নয়। অধিকাংশ সময়ই তিনি ভাঙা এ ঘরের সামনে বসে বসে চোখের জল মুছেন। কিন্তু হয়তো কেউ দেখেন আবার কেউবা এড়িয়ে যান।

প্রতিবেশিরা জানালেন, তিনি শুধু ঘরের জন্য কাঁদতে কাঁদতে অনেক সময় ‘প্রলাপ বকেন’।

এ বিষয় নিয়ে মুঠোফোনে কথা হয় উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শরিফুননেছা মিকির সঙ্গে। তিনি বাঙলার কাগজ ও ডনকে বলেন, ‘এখন শুধু ভূমিহীনদের গৃহ নির্মাণ প্রকল্প চালু আছে, এবং এলাকায় এর কাজও চলছে।’