নরসিংদীতে গোলাগুলিতে ছাত্রদলের সাবেক নেতা নিহত
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলার কাগজ; নরসিংদী : নরসিংদীতে ছাত্রদলের দুইপক্ষের গোলাগুলিতে ছাদেকুর রহমান ছাদেক নামে সংগঠনটির সাবেক এক নেতা নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ মে) বেলা ৪টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকনের বাসভবনের সামনে এ গোলাগুলি হয়। ছাদেক জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন।
ঘটনার পর খায়রুল কবির খোকনের বাসভবন ঘিরে রেখেছে পুলিশ। এ ঘটনায় কামাল হোসেন নামের স্থানীয় এক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে।
ছাদেক ছাড়াও আশরাফুল নামের আরেকজন গুলিবিদ্ধ হন। প্রথমে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় জেলা হাসপাতালে নেওয়া হয় আশরাফুলকে। এর আধ ঘণ্টা পর হাসপাতালে নেওয়া হয় ছাদেককে। তাঁর অবস্থা গুরুতর হলে তাঁকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। ছাদেককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত সোয়া ৭টার দিকে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ছাদেকের মৃত্যুর আগে নরসিংদী জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহমান জানিয়েছিলেন, ছাদেক নামে একজনের অবস্থা গুরুতর। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানায়, বেলা সাড়ে ৩টার দিকে জেলা ছাত্রদলের বহিষ্কৃত নেতা মাইন উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি পিকআপ ভ্যান, প্রাইভেটকার ও ৮-১০টি মোটরসাইকেলে করে লোকজন জেলখানা মোড় থেকে গ্যাস অফিসের রাস্তায় ঢুকে অতর্কিত গুলি করতে থাকে। এ সময় ট্রাক থেকে তাঁরা নেমে খায়রুল কবির খোকনের বাসভবনের দিকে যেতে থাকেন। তখন খোকনের বাসভবনে কেউ ছিলেন না। তাঁর বাসভবনের ফটকে তালা ঝুলছিলো।
মাইনউদ্দিন ও তার সঙ্গীদের তাণ্ডবে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। এ সময় স্থানীয় জনতার হাতে বাবু নামের এক তরুণ আটক হয়। আটক বাবু জানায়, তার বাড়ি শিবপুর উপজেলার নোয়াদিয়া গ্রামে। একই উপজেলার ভুরভুরিয়া বাজারের একটি মাইকের দোকানের কর্মচারী সে। তার দাবি, তিনি মাইনউদ্দিনদের মাইক ভাড়া দিয়েছেন।
মাইনউদ্দিন বলেন, তারা ২৭ তারিখের জনসভা সফল করার জন্য ছাদেকুর রহমান ছাদেকের নেতৃত্বে মিছিল নিয়ে চিনিশপুরে বিএনপি কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন। পথে জেলখানা মোড়ে পৌঁছালে খায়রুল কবির খোকনের লোকজন, ছাত্রদল সভাপতি নাহিদ ও জাইদুল, লাল ভাই ও তানভীরের নেতৃত্বে তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলি করলে তাদের দুইজন গুলিবিদ্ধ হন।
তাকে ছাত্রদল থেকে বহিষ্কার করার পরও কেনো তিনি খোকনের বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে মাইনউদ্দিন বলেন, তিনি কখনো হামলা চালান নি। বারবার তাদের ওপরই হামলা চালিয়ে যাচ্ছে অপরপক্ষ।
এদিকে, ঘটনার পর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল কবীর খোকন বলেন, তিনি আজ দিনভর ঢাকায় দলীয় সভা-সমাবেশে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তাঁর এসব অনুষ্ঠানের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ হচ্ছে।
ঢাকায় থেকে কীভাবে তিনি বা তাঁর লোকেরা হামলা করবেন- এমন প্রশ্ন রেখে তিনি আরও বলেন, ‘মাইনউদ্দিনকে এখন ট্রামকার্ড হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বারবার পুলিশের সহায়তায় সে আমার বাসায় এবং গাড়িবহরে হামলা চালাচ্ছে। অথচ পুলিশ আমার অভিযোগ আমলে না নিলেও তাঁদের অভিযোগ আমলে নিচ্ছে।’