প্রধানমন্ত্রী : আমি চাই শিশুদের জীবন নিরাপদ হোক

প্রধানমন্ত্রী : আমি চাই শিশুদের জীবন নিরাপদ হোক

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি চাই আমাদের দেশের আজকের শিশুদের জীবন সুন্দর ও নিরাপদ হোক। কারণ আজকের শিশু-কিশোররাই আগামী দিনের জাগরণ। তাঁরা বাংলাদেশের কর্ণধার হবে। তাই আমি চাই, শিশুরা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠুক।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় গাজীপুরের মৌচাকে বাংলাদেশের স্কাউট আয়োজিত ৩২তম এশিয়া প্যাসিফিক একাদশ জাতীয় স্কাউট জাম্বুরি সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

শিশু-কিশোরদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের শিশু বাংলাদেশে যারা বড় হবে তারা উদার মন নিয়ে বড় হবে। দেশপ্রেমে উদ্ভুব্ধ হবে, দেশকে সুন্দরভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং গঠন করার কাজ করবে। কাজেই স্কাউটিং নতুন প্রজন্মকে নৈতিক ও জীবনধর্মী প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে আর তরুণদের মধ্যে আধুনিক, প্রগতিশীল, সৃজনশীল গুণাবলি বিকশিত হয়। ফলে স্কাউট সদস্যরা সেবার সেবার মন্ত্রে দীক্ষিত হচ্ছে এবং সচেতন ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে নিজেদেরকে গড়ে তুলছে। পরোপকারী হিসেবে সমাজ সেবার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখে যাচ্ছে। আমি চাই স্কাউট আরও ব্যাপকভাবে গড়ে উঠুক।

দেশের স্কাউটকে শক্তিশালী করতে সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগের কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, স্কাউট আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে আমরা নানা উদ্যোগ নিয়েছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ১৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ স্কাউট সম্প্রসারণে স্কাউট শতাব্দী ভবন নির্মাণ প্রকল্প, ৪৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সিলেটের মৌলভীবাজার জেলায় স্কাউট ভবন নির্মাণ প্রকল্প, ৪৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয়ে আঞ্চলিক স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্র লালমাই উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়া প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ১৯ লাখ ব্যয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাব স্কাউটিং সম্প্রসারণে চতুর্থ পর্যায়ের প্রকল্পের বাস্তবায়ন হচ্ছে। ৩৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাব দল গঠন এবং কাব স্কাউট প্রশিক্ষণের জন্য জাতীয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র মৌচাকে ৯ একর ভূমি বরাদ্দ দিয়েছে। তবে এ ভূমিতে বনায়ন ঠিক রাখতে হবে। বনায়ন ধ্বংস করা যাবে না, বেশি স্থাপনা করা যাবে না। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষার যতটুকু করার তা ইতিমধ্যে করা হয়েছে। এনিমেশন স্টুডিও নির্মাণ করা হয়েছে, আধুনিক সুইমিং নির্মাণ কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের রোভার স্কাউটের জন্য একটি অ্যাডভেঞ্চার ট্রেনিং সেন্টার নির্মাণের লক্ষ্যে ১৮৮ একর জমি বরাদ্দ দিয়েছি এবং দেশের সকল জেলা ও উপজেলায় স্কাউট ভবন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করে দেবো। আমাদের লক্ষ্য দেশের স্কাউটিং সম্প্রসারণের মাধ্যমে শিশু কিশোর ও যুবদের আত্মনির্ভরশীল ও সুনাগরিক গড়ে তোলা। আমরা সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুটি করে কাব স্কাউট ও রোভার স্কাউট দল খোলার নির্দেশ দিয়েছি এবং মাদরাসাগুলোতেও যাতে স্কাউট দল গঠন করা হয়, সে বিষয়ে কাজ করতে হবে সকলকে।

স্কাউটারদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তোমাদের মধ্যে সুপ্ত আছে আমাদের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক নেতা, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, বিজ্ঞানী, চিকিৎসক, অর্থনীতিবিদ, প্রকৌশলী, কবি, সাহিত্যিক, প্রশাসক, শিক্ষক ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য- যারা দেশের সেবা করছে। তোমাদের মাঝ থেকেই সকলে উঠে আসবে। তোমাদের জ্ঞান, তোমাদের চেতনা, তোমরাই তো পারবে এ দেশেকে আগামীদিনে এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং তোমাদের মাঝ থেকে সেই নেতৃত্ব গড়ে উঠবে, আমি সেই আশা করি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা, দারিদ্রমুক্ত, উন্নতসমৃদ্ধ তথ্য-জ্ঞানসম্পন্ন একটি জাতি। যে জাতি হবে স্মার্ট জাতি। আমাদের সরকার, আমাদের অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের জনগোষ্ঠীকে স্মার্ট জনগোষ্ঠী হিসেবে তুলবো। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

এর আগে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত ও তাঁকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা, স্কার্ফ, ব্যাচ ও ওয়াগল প্রদান করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী স্মারক ডাকটিকেট অবমুক্ত, শাপলা কাব অ্যাওয়ার্ড বিতরণ ও এপিআর স্কাউট পতাকা হস্তান্তর করেন। 

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারক প্রদান করা হয়।