ম্যানেজারের জন্য ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি কুকিচিনের!

ম্যানেজারের জন্য ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি কুকিচিনের!

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : বান্দরবানে অপহৃত সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তাকে মুক্তি দিতে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে পাহাড়ের সন্ত্রাসী সংগঠন কুকিচিন। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) অপহৃত সোনালী ব্যাংক রুমা শাখার ব্যবস্থাপক নিজাম উদ্দিনের পরিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

নিজাম উদ্দিনের পরিবারের এক সদস্য বলেন, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নিজাম উদ্দিনের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর ফোনে যোগাযোগ হয়েছে। অপহরণকারীরা তাঁর মুক্তির জন্য ১৫ লাখ টাকা দাবি করেছে। পরে পরিবার বিষয়টি সোনালী ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছে। ব্যাংকের পক্ষ থেকে নিজামকে উদ্ধারে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে।

পরিবার ও ব্যাংকের পক্ষ থেকে মুক্তিপণ দাবির বিষয়টি প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে। প্রশাসনও আশ্বস্ত করেছে যে, নিজাম উদ্দিনকে উদ্ধারে তাঁদের সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। 

এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের ডিজিএম (বান্দরবান) ওসমান গণি বলেন, ‘আমাদের সহকর্মী নিজাম উদ্দিনকে উদ্ধারে সব ধরনের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছি। প্রশাসন খুবই তৎপর। সোনালী ব্যাংক বান্দরবানের সব শাখায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।’

তবে মুক্তিপণ ও সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হন নি এই কর্মকর্তা। 

রুমা উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার (ভূমি) দিদারুল আলম বলেন বলেন, অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজারের সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগের বিষয়টি আমরা শুনেছি। যে কোনও মূল্যে তাঁকে উদ্ধারে প্রশাসন জোর তৎপরতা চালাচ্ছে। ইতিমধ্যে রুমা এলাকার সব ব্যাংকে বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। রুমা সদরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ এবং আর্মড পুলিশ নিয়োজিত রয়েছে।

গত মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাতে রুমা উপজেলা প্রশাসন ভবনে হামলা চালায় একদল সশস্ত্র গোষ্ঠী। এ সময় সন্ত্রাসীরা সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা, নিরাপত্তারক্ষীসহ অন্তত ২০ জনকে মারধর করে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপক নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে বলে জানান রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজাহান। 

তিনি বলেন, তারা এই সময় ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ ও আানসার ভিডিপির দুটি এসএমজি ও ৬০ রাউন্ড গুলি, আটটি চীনা রাইফেল ও ৩২০ রাউন্ড গুলি ও আনসারের চারটি শর্টগান ও ৩৫ রাউন্ড গুলি লুট করে।

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নিজাম উদ্দিনের সন্ধান মেলে নি।

ঘটনার পরদিন বুধবার পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বান্দরবান জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপার ও সোনালী ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শন শেষে বুধবার বিকেলে আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ-আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ব্যাংকে লুটপাট করা হয়েছে, অস্ত্র লুট করে ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ করা হয়েছে। আমরা সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। ম্যানেজার ও অস্ত্র উদ্ধারের জন্য সমন্বিতভাবে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’

সোনালী ব্যাংকের রুমা শাখার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই পরেরদিন বুধবার দুপুরে থানচি উপজেলার সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকেও লুটের ঘটনা ঘটে।

থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন জানান, বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ৫০-৬০ জনের একটি ডাকাত দল থানচি বাজারের দুটি ব্যাংকের শাখায় লুটপাট ও ডাকাতি করে। সন্ত্রাসীরা সোনালী থেকে ১৫ লাখ ও কৃষি ব্যাংক থেকে আড়াই লাখ টাকা লুট করেছে বলে ব্যাংক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।