ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসক দম্পতির বাসা থেকে গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসক দম্পতির বাড়ি থেকে তামান্না আক্তার (১৪) নামে এক কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। নিহতের বাবা-মায়ের অভিযোগ, তামান্নাকে হত্যা করা হয়েছে। তাঁকে চিকিৎসক দম্পতি প্রায়ই নির্যাতন করতো।
নিহত তামান্না কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার সুমন মিয়ার বড় মেয়ে। সুমন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে জেলা শহরের ভাদুঘর এলাকায় চিকিৎসক ইসরাত জাহানের বাবা বাবুল মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকেন।
তামান্না চিকিৎসক ইসরাত জাহান ও তার স্বামী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আনিসুল হকের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে ইসরাত জাহানের বাবা বাবুল মিয়া ঢাকা থেকে নিহতের বাবা সুমনকে ফোন করেন। চিকিৎসকের বাবা সুমনকে মোবাইল ফোনে জানান যে, তামান্না গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তার মেয়ের লাশ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রয়েছে।
নিহতের খালু আবদুল কাদের বাঙলার কাগজকে বলেন, চিকিৎসক দম্পতি আগে ঢাকায় থাকতো। তামান্না তখন গৃহকর্মী হিসেবে তাঁদের সঙ্গে ঢাকায় থাকতো। দুই বছর আগে তাঁরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চলে আসেন। এরপর থেকে তাঁদের সঙ্গে মৌলভীপাড়ার বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতো তামান্না।
গৃহকর্মীর বাবা সুমন মিয়া বলেন, ‘আমার মেয়ে যদি আত্মহত্যা করে থাকে, তাহলে তাঁর লাশ নামানোর আগে আমাদের জন্য অপেক্ষা করতো। কারণ ভাদুঘর থেকে মৌলভীপাড়া যেতে ১০-১৫ মিনিট সময় লাগার কথা। কিন্তু তাঁরা লাশ নিজেরাই হাসপাতালে নিয়ে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘গত কয়েকদিন আগে মেয়ে জানিয়েছে যে, তাঁরা মেয়েকে প্রায়ই মারধর করতো। তাঁরা আমার মেয়েকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে।’
এদিকে সন্ধ্যা ৬টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ইসরাত জাহানকে দেখা যায়। গণমাধ্যমকর্মীদের দেখে মুখ ঢেকে তিনি সেখান থেকে চলে যান। গণমাধ্যমকর্মীরা কথা বলতে চাইলে তিনি কোনও সাড়া দেন নি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মির্জা সাইফ বলেন, ‘বিকাল সাড়ে ৫টায় হাসপাতালে আনা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ওই কিশোরীকে মৃত ঘোষণা করা হয়। হাসপাতালে আনার আগে তার মৃত্যু হয়েছে।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন বাঙলার কাগজকে বলেন, ‘ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলা যাবে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’