ভারত-পাক সম্মুখ সমরের শেষ যুদ্ধ কার্গিল। বিজয় দিবসের ২৩ বছর পূর্তি আজ।

ভারত-পাক সম্মুখ সমরের শেষ যুদ্ধ কার্গিল। বিজয় দিবসের ২৩ বছর পূর্তি আজ।

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : কার্গিল বিজয় দিবসের আজ ২৩ বছর পূর্ণ হলো। ভারত পাকিস্তানের মধ্যে হওয়া এটাই ছিলো শেষ সম্মুখ যুদ্ধ। এরপরে আর ভারত পাকিস্তান কোনও সম্মুখ সমরে জড়ায় নি। এর আগে ১৯৪৭ , ১৯৬৫ , ১৯৮৪ সালে যুদ্ধ হয়েছিলো ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে। প্রথম দুই যুদ্ধ কাশ্মীর ওয়ার নামেই পরিচিত। ১৯৮৪ সালের যুদ্ধ সিয়াচেন যুদ্ধ নামে পরিচিত। ১৯৯৯ সাল হয় কার্গিল যুদ্ধ। তবে এই চারবারই জয়ী হয় ভারত। মাঝে ৭১ এর যুদ্ধে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের থেকে মুক্ত করতে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলো ভারত। সেই যুদ্ধে জয় হয়েছিলো বাংলাদেশের।

কার্গিল সম্মুখ সমরে ভারতের জয়লাভের আজ ২৩ বছর পূর্ণ হলো। ফিরে দেখে নেওয়া যাক ইতিহাস। 

যুদ্ধের শুরু : কার্গিল যুদ্ধ হয়েছিলো পাকিস্তানের অনুপ্রবেশকারীদের রুখতে। অনুপ্রবেশকারীর দল ১৯৯৮ সালের শীতকালে নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছিলো। কার্গিলের দ্রাস এবং বাটালিক সেক্টরে এনএইচ ১এ তারা বসবাস শুরু করেছিলো। ১৯৯৯ সালের ৮ মে থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত এই যুদ্ধ চলে। ভারত সফলভাবে অপারেশন বিজয় সম্পন্ন করে। 

আজকের দিনে ভারত কার্গিল যুদ্ধে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিজয়ের ২৩ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন করেছে। বীরদের আত্মত্যাগ এবং সাহসিকতার প্রতি সম্মান জানিয়েছে দেশ। কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকাণ্ডের জন্য সেখানে অনেক অর্থ প্রদান করা হতো। ১৯৯০ এর দশকে এর জন্য উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। ভারত লাহোর চুক্তির মাধ্যমে পাকিস্তানের সঙ্গে একটি শান্তিপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সমাধানের জন্য চেষ্টা করেছিলো। এটি ১৯৯৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্বাক্ষরিত হয়েছিলো। এরই মধ্যে পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর কিছু আধাসামরিক বাহিনী গোপনে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলো। তাদের কিছু মানুষ আবার জঙ্গি সংগঠন মুজাহিদিনের হয়েও কাজ করছিলো। তখন কাশ্মীর এবং লাদাখের মধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। পাকিস্তান ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সিয়াচেন হিমবাহ ছেড়ে যেতে বাধ্য করার জায়গা তৈরি করে ফেলেছিলো। বেআইনি পাকিস্তানি অধিগ্রহণ পাকিস্তানের এক্স কর্পস কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাহমুদ আহমেদ, মেজর জেনারেল জাভেদ হাসান এবং আশরাফ রশিদ এবং পাকিস্তানের তৎকালীন সেনা জেনারেল পারভেজ মোশাররফ কার্গিলে বেআইনি ভারতের সীমার মধ্যে ঢুকে তা অধিগ্রহণ করার পরিকল্পনা করেছিলো। পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ এই অভিযান সম্পর্কে জানতেন না বলে দাবি করেছিলেন। 

ওই সময় ভারতীয় বিমান বাহিনীকে কার্গিলে এলওসি অতিক্রম না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো। ফাইটার পাইলটদের আক্রমণের নতুন কোণ নিয়ে আসতে হয়েছিলো; কারণ বেশিরভাগ শত্রু কার্যত এলওসিতে ছিলো। পাক বাহিনী ভারতীয় বাহিনীর সাহসিকতার কাছে শেষ পর্যন্ত পরাজিত হয় এবং তারা যে ভারতীয় ভূখণ্ড দখল করে আসছিলো, সেখান থেকে আজকের এইদিনে চলে যেতে বাধ্য হয়।