‘রাশিয়ার তেল দেশে পরিশোধন সম্ভব নয়।’

‘রাশিয়ার তেল দেশে পরিশোধন সম্ভব নয়।’

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : রাশিয়া থেকে আনা অপরিশোধিত জ্বালানি তেল দেশের বর্তমান অবকাঠামো ব্যবহার করে পরিশোধন করা যাবে না। এই তেলের নমুনা পরীক্ষা করে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের (ইআরএল) দেওয়া প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে। নিজস্ব ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার পর তা যাচাই-বাছাই করে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে ইআরএলের কারিগরি কমিটি।

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রতিবেদনটি বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) কাছে জমা দিয়েছে ইআরএল। নমুনা পরীক্ষার ফলাফল ও মতামত জানানো ছাড়াও বেশকিছু কারিগরি বিষয় তুলে ধরা হয়েছে ২০ পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদনে। বিপিসি ও ইআরএলের উচ্চপর্যায়ের দায়িত্বশীল সূত্র বাঙলার কাগজ ও ডনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিপিসির চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ মঙ্গলবার রাতে বাঙলার কাগজ ও ডনকে বলেন, ইআরএল বর্তমান অবকাঠামো ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে রাশিয়ার জ্বালানি তেল পরিশোধন করতে পারবে না বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে। নমুনা পরীক্ষা করে তাঁদের কারিগরি দল এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। শিগগিরই নমুনা সরবরাহকারী সংস্থাকে এটি জানানো হবে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারত, চীনসহ কোনও কোনও দেশ রাশিয়া থেকে কম দামে জ্বালানি তেল কিনছে। গত মে মাসে বাংলাদেশকেও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কেনার প্রস্তাব দেয় রাশিয়া।

এদিকে এর আগে রাশিয়ার অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশিষ্ট্য দেখেই তা পরিশোধন করা যাবে না বলে ‘ধারণা দিয়েছিলেন’ ইআরএল ও বিপিসির কর্মকর্তারা। এরপর গত মাসে রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেলের নমুনা দেশে আসে। পহেলা সেপ্টেম্বর এটি ইআরএল পরীক্ষাগারে পৌঁছায়। তেলের নমুনা পরীক্ষার পর কারিগরি দল তা যাচাই–বাছাই করে দেখেছে। কারিগরি কমিটির প্রধান ছিলেন ইআরএলের মহাব্যবস্থাপক রায়হান আহমদ। সদস্যসচিব ছিলেন ব্যবস্থাপক সামিউল ইসলাম।

ইআরএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. লোকমান বাঙলার কাগজ ও ডনকে বলেন, মঙ্গলবার সকালের দিকে তাঁরা প্রতিবেদনটি বিপিসির কাছে জমা দিয়েছেন। বিপিসির চেয়ারম্যানের পক্ষে প্রতিবেদনটি গ্রহণ করেন সংস্থাটির মহাব্যবস্থাপক কুদরত-ই-ইলাহী।

দেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় তেল পরিশোধনাগার ইআরএল বর্তমানে সৌদি আরব ও আরব আমিরাত থেকে আনা অপরিশোধিত জ্বালানি তেল (ক্রুড অয়েল) শোধন করে ডিজেল, পেট্রোল ও অকটেনসহ বিভিন্ন রকম জ্বালানি তেল উৎপাদন করে। বছরে ১৫ লাখ টন তেল শোধনের সক্ষমতা আছে তাঁদের। এ থেকে বছরে ৬ লাখ টন ডিজেল পাওয়া যায়। সৌদি থেকে অ্যারাবিয়ান লাইট ও আরব আমিরাত থেকে আসে মারবান ক্রুড অয়েল। এর চেয়ে রাশিয়ার তেলের ঘনত্ব ‘অনেক বেশি’।

গত মে মাসে বাংলাদেশকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কেনার প্রস্তাব দেয় রাশিয়া। তবে বাংলাদেশের আগ্রহ পরিশোধিত জ্বালানি তেল নিয়ে, বিশেষ করে ডিজেল কেনায়। এখন পর্যন্ত ডিজেল বিক্রির কোনও প্রস্তাব দেয় নি রাশিয়া।