চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন আজ
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের পর চট্টগ্রামে উদ্বোধন হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। আজ মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই প্রকল্প ছাড়াও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) তিনটি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। আজ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের উদ্বোধন করবেন তিনি। প্রকল্প চারটি বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ৬ হাজার কোটি টাকা। অন্য দুটি প্রকল্প হলো : বাকলিয়া এক্সেস রোড ও ফৌজদারহাট-বায়েজিদ সংযোগ সড়ক প্রকল্প।
সিডিএ’র প্রকল্প তিনটির নামকরণ করা হয়েছে : ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব সড়ক’, ‘মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী সিডিএ ফ্লাইওভার’ এবং ‘জানে আলম দোভাষ সড়ক’। এসব প্রকল্প উদ্বোধন উপলক্ষে নগরীর পতেঙ্গায় সুধী সমাবেশের আয়োজন করেছে সিডিএ।
নগরীর লালখানবাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের কাজ এখনও শেষ হয় নি। নির্মাণ হয় নি এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠা-নামার র্যাম্প। তাই উদ্বোধন হলেও এতে যান চলাচল শুরু হবে না। ২০১৭ সালের ১১ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। ব্যয় ধরা হয়েছিলো ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। প্রকল্পটির ২০২০ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিলো। কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে প্রকল্প ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২৯৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত।
যাতায়াত সহজ করবে বায়েজিদ সংযোগ সড়ক :
প্রায় এক দশক আগে ‘এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের বহিঃসীমানা দিয়ে লুপ রোড নির্মাণসহ ঢাকা ট্রাঙ্ক রোড থেকে বায়েজিদ বোস্তামী রোড পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ’ প্রকল্প হাতে নেয় সিডিএ। ২০১৩ সালের অক্টোবরে একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিলো ১৭২ কোটি টাকা এবং মেয়াদ ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর কয়েক দফা সময় ও ব্যয় বাড়ে। বর্তমানে ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৫৩ কোটি টাকা। পুরোপুরি কাজ শেষ না হলেও সড়কটিতে যান চলাচল শুরু হয়েছে। ফলে ঢাকা থেকে আসা যানবাহন চট্টগ্রাম নগরে না ঢুকে সরাসরি পার্বত্য চট্টগ্রাম ও উত্তর চট্টগ্রামে যেতে পারে।
বাকলিয়া সংযোগ সড়ক :
২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাকলিয়া সংযোগ সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয় চউক। ২০১৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর একনেকে প্রকল্পটি পাস হয়। শুরুতে ব্যয় ধরা হয়েছিলো ২০৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে ২২০ কোটি ৭১ লাখ টাকা। সড়কটি নগরের সিরাজউদ্দৌলা সড়কের চন্দনপুরার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের পাশ থেকে শুরু হয়ে শাহ আমানত সেতু সংযোগ সড়কে গিয়ে শেষ হয়েছে।
চালু হবে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল :
চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব অর্থায়নে ১ হাজার ২৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ হয়েছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নকশা অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের তত্ত্বাবধানে এটি নির্মাণ করে দেশি প্রতিষ্ঠান ই-ইঞ্জিনিয়ারিং। ২০২২ সালের মাঝামাঝি এর কাজ শেষ হয়। বঙ্গোপসাগর ও কর্ণফুলী নদীর মোহনায় ড্রাইডক ও বোটক্লাবের মাঝে ২৬ একর জায়গাজুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল। এটি চালু হলে চট্টগ্রাম বন্দর ১০ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের (পানির নিচে জাহাজের গভীরতা) জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা অর্জন করবে। একইসঙ্গে জাহাজ চলাচলের দূরত্ব কমবে।