কবিতা : তব মাঝে : কালাম আঝাদ

কবিতা : তব মাঝে : কালাম আঝাদ

[২৭.০৪.২০১৭ খ্রিস্টাব্দ (মোহাম্মদপুর, ঢাকা)]

তব রেণু মাঝে
মম রেণু একাকার
হারাবো হেথায় দুজন আজই
যতোই তনু অসার।
হিয়া মাঝে তব-মম
বাঁজবে সুখের ঢেউ
কে আজ বলো বলবে কিছু
জানবে কি কিছু কেউ?
ধরণীজুড়ে সবই রবে
হারাবো দুজনে আজ
অন্য গ্রহে অন্য কোথাও
থাকবে সুখের সাঁজ।
চন্দ্র কিংবা মঙ্গল চষবো
যাবো ভিন্ন গ্রহে
ক্লান্ত তনুও শ্রান্ত হবে
যাবে সবই সয়ে।
ঘর্মাক্ত বা লবণাক্তেও
হবই একাকার
জানবো না আমি, আঁধারেও তুমি
অজানায় কে কার।
সংযোগে রবে যে যোগ
হারাবো তব মাঝে
কতো সেকেন্ড, গেলো কতো দিন
অজানাই রয়ে যাবে।
তব হস্তে মম হাত
ওষ্ঠ্য জড়াবে ওষ্ঠ্যে
তনু হবে এক, চেয়ে নাহি দেখ
হাত স্কন্ধ বা পৃষ্ঠে।
কিংবা আজই নিতম্ব ‘দগ্ধ’
পদ মাঝে তব পা
কুহর আজই ভরবে জেনো
স্পর্শ খেলবে পাশা।
ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়া
কেনো জিজ্ঞাসু মন
লালায়িত লালা হেথায়
বিনা প্রশ্নেই দুজন।
পাহাড় চূড়ায় ঊর্ধ্ব রসে
ঝর্ণা বইবে নিচ
নদী কিংবা খালে রবে
হবে সমুদ্র বিচ।
বালুচরে হারাবো দুজন
হারাবে মোদের মন
ঘড়ির কাটা রবেই থেমে
খুলবে আঁখি কোন জন?
বন্ধ আখি, মন্দ সবই
তবুও প্রশ্ন নেই
এলেও কেউ, যাবে ফিরেই
বধির, অন্ধ হবেই।
শব্দ আজই প্রতিধ্বনি
গাইবে জয়গান
কখনো সুরে, মিলবে স্বরে
হবে ঐকতান।
সমস্থানে কতো যে সময়
কেটেই যাবে আজ
তুমিই আমার পুরো তনু
আমিই তব ‘রাজ’।
রাজা কিংবা রাণী আজই
নেই যদিও সিংহাসন
ধরায় জানি বাজবে বাঁশি
চলবে শীতল রণ।
রণাঙ্গনে আজ দুজনা
নিশ্চুপ হবে সব ভাবনা
থাকবে না আজ কোনও মানা
তব মাঝেই দেবো হানা।
পাহাড় চূড়ার ঊর্ধ্বে উঠেও
নামবে নিচে ফের
ভাঙ্গবে প্রস্তর, হবে আজই
আমাতেই তুমি ঢের।
শব্দ যতোই কর্ণ কুহরে
কিংবা প্রতিধ্বনি
তুমিই আজ আমার মাঝে
মিশবেই তা জানি।
ঢের প্রতীক্ষা শেষ হবে আজই
আসবেই তুমি জানি
ধু ধু বালুচর তবুও তুমি
তুলবে ‘শুভ্র’ পানি।
চন্দ্র আলোক তন্দ্রা হলেও
আঁধার সরাবে রূপ
উড়বে ধোঁয়া কালো-সাদা
তুমিই হবে ধূপ।
আলোক ছাড়াও কায়ায় তব
রইবে তব ছায়া
তব দৃষ্টে আঁখি মম
বাড়াবেই যে মায়া।
সাদা-শ্যাম কিংবা কৃষ্ণে
চুইয়ে যাবে রূপ
তৃষ্ণার মাঝে নেই পানি যে
তব মাঝেই কূপ।
ঝড়বে জল এরপরেও
বেড়েই যাবে বল
যতোই দূর তবুও পৌঁছাবো
দেখবোই তব তল।
আইসবার্গে কাত যদিও
বৃহৎ টাইটানিক
তবুও মম তরীই সেরা
যাবোই তীরে ঠিক।
যতোই জল কিংবা ঢেউ
পড়ে যদিও আছড়ে
ঠিকই তুমি শক্ত করে
রও বাহু ধরে।
জলরঙে আঁকবো ছবি
ক্যানভাস হবে তুমি
মোনালিসাও মানবে হার
লিওনার্দো ফেল জানি।
এরিস্টটল, প্লেটো কিংবা
ধীর আইনস্টাইন
নিউটনেও হাসবে আজই
রবিও দেখবে মাইন।
রণতরী আজ শত বোমারু
বইবে ঠিক তায়
পরমাণুও মানবে হার
নিউট্রনও ওদিকেই যায়।
ইলেকট্রন বা প্রোটন যদি
বিনা আকর্ষণ হয়
মধ্যাকর্ষণ শক্তি আজই
উল্টো রথে বয়।
ব্ল্যাকহোলে সূচের ন্যায়
ঢুকবে সবই আজ
কর্মহীনেও ফলবে কর্ম
ধর্ম ছাড়াও কাজ।
স্নিগ্ধ আলোক, তারকালোক
ঠিকরে পড়বে ছায়া
মম মাঝে তব আজ
একই হবে কায়া
দ্বিতনু দ্বি হিয়াও
সহমতের আজ
বিনা শব্দে বিনা মেঘেই
পড়বে আজই বাজ।
বজ্রপাতে কিছু সময়
দুজন হবই পার
আগেও তুমি, পরে তুমি
তুমিই মম পাড়।
একইসাথে উঠবো দুজন
থাকবো সমস্থান
তুমি আছো, তাইতো আজ
পাল্টায় ধ্রুব মান।
যতোই ধ্রুবক থাকুক আজই
সবই ঊর্ধ্ব-অধঃ
অপরাধী হয়ে আজও
বলবো না পাপ শুধো।
আজই শুধু পাপ যে
পূণ্যময় তব মাঝে
আছো তুমি তাই গো
বিশ্বজয় সকাল-সাজে।
বিজয়ী গো নই বিজেতা
রব ধরণীবল
কূয়োর মাঝেও শীতলধারা
বইবে কলকল।
তব আঁখি শত কাব্য
গাইবে পাখি গান
এক পলকে লিখবো সবই
একক মনপ্রাণ।
দৃষ্টি আজই অপলক গো
রূপ দর্শনের লাগি
ঘুমিয়ে গেলেও উঠবো জেগে
উঠবে তুমিও জাগি।

(কবিতাটির ৩ ভাগের ১ ভাগের মতো প্রকাশিত হলো)