কুমিল্লায় ট্রেন লাইনচ্যুতিতে ৪ মাদ্রাসা ছাত্র গ্রেপ্তার : মামলা

কুমিল্লায় ট্রেন লাইনচ্যুতিতে ৪ মাদ্রাসা ছাত্র গ্রেপ্তার : মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় লাকসাম রেলওয়ে থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়েছে। রেলওয়ের পিডব্লিউ লিটন চাকমা বাদী হয়ে লাকসাম রেলওয়ে থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় চার মাদ্রাসা ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন লাকসাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুরাদ উল্লাহ বাহার।

আটকরা হলো : চৌদ্দগ্রাম উপজেলার তেলীগ্রামের কাজী আমির হোসেনের ছেলে কাজী সামির (১৫), একই গ্রামের কাজী আবুল কাসেমের ছেলে কাজী আল আমিন (১৫), আবু হানিফের ছেলে শাকিবুল হাসান ফাহিম (১৪) ও আবদুল মালেকের ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুন জিহাদ (১৩ )। তারা সবাই একই গ্রামের বাসিন্দা ও মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র।

জানা গেছে, প্রথম পর্যায়ে অতিরিক্ত গরমে রেললাইন বেঁকে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বলে দাবি করেছিলেন রেলওয়ে কর্মকর্তাদের পাশাপাশি জিআরপি পুলিশও। কিন্তু ঘটনার তিনদিনের মাথায় চার মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটকের পর রেলদুর্ঘটনার নতুন মোড় নেয়।

অভিযোগ উঠেছে, নাঙ্গলকোট হাসানপুর স্টেশনের তেজের বাজার শিহর এলাকার রেল কালভার্টের স্লিপারের সঙ্গে সংযুক্ত চারটি বেয়ারিং প্লেটের তিনটিই খুলে নিয়েছিলো তারা। পরবর্তীতে গ্রামবাসীর তাড়া খেয়ে স্কুলব্যাগ ফেলে পালিয়ে যায় সবাই। তার কিছুক্ষণ পরই বিজয় এক্সপ্রেসের ৯টি বগি লাইনচ্যুত হয়।

ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া স্কুল ব্যাগে থাকা একটি জন্মনিবন্ধন সনদের ক্লু থেকে পুলিশ চৌদ্দগ্রাম উপজেলার তেলীগ্রাম থেকে ওই চার কিশোরকে আটক করে। তারা স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। চারজনের বাবাই মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চারজন জানায়, মূলত ঈদের সময় আতশবাজি কিনতে তাদের টাকার প্রয়োজন ছিলো। সেই টাকা যোগাড় করতে রেল যাত্রাপথের বেয়ারিং প্লেট খুলে নিয়েছিলো তারা।

রেলওয়ের পক্ষ থেকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলাটি তদন্ত করছে জিআরপি। আর রেলওয়ের ৫ সদস্যের একটি কমিটিও দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।

পূর্বাঞ্চল বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ডক্সফাইকের মাধ্যমে বেয়ারিং প্লেটের সঙ্গে লাইন আটকে রাখা হয়। যদি বেয়ারিং না থাকে তাহলে গেজটা বড় হয়ে যেতে পারে।’

জিআরপি, চট্টগ্রাম অঞ্চলের রেলওয়ে পুলিশ সুপার প্রকৌশলী হাসান চৌধুরী বলেন, আটকের পর তাদের আদালতে পাঠানো হয়। রেল দুর্ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে। প্রতিবেদন পেলে আসল তথ্য জানা যাবে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনের দিন ১৭ মার্চ দুপুরে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের হাসানপুর তেজের বাজার এলাকায় লাইনচ্যুত হয় জামালপুরগামী বিজয় এক্সপ্রেসের ৯টি বগি। এতে অন্তত ৩০ জন আহত হন। দুর্ঘটনার ১৫ ঘণ্টা চট্টগ্রামের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকে। একটি লাইন মেরামতের পর ট্রেন চলাচল শুরু হলেও এখনও বগিগুলো উদ্ধার কাজ চলছে। ফলে তিনদিন ধরেই ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় চলছে।