কালাম আঝাদ’র কলাম : আমাদের ভারত বিরোধিতা করা কি যুক্তিযুক্ত?

কালাম আঝাদ’র কলাম : আমাদের ভারত বিরোধিতা করা কি যুক্তিযুক্ত?

সম্পাদকীয় মত, বাঙলা কাগজ : এই যে ধরুন, আজকে আলাল বিদেশে যেতে পারলেন না, ধরুন, এটি ভারত বিরোধিতার কারণেই দেশটির পক্ষ থেকে নেতিবাচক মন্তব্য করা হয়েছে, ফলে আলাল যেতে পারেন নি। অর্থাৎ তাঁর সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও, তাঁকে যেতে দেওয়ার ‘ছাড়পত্র’ দেওয়া হয় নি। তাহলেও কি বিষয়টি আমাদের জন্য একটি বার্তা নয়? কারণ আমরা এই যে বিভিন্ন সময় ভারত বিরোধিতা করি, কিন্তু একবারও কি ভেবে দেখেছি, এই ভারত আমাদের জন্য কতো কিছু করেছে এবং করছে। এই যে ধরুন, আপনি ইউরোপের দেশগুলোতে যাবেন, তাহলে কিন্তু আপনাকে ভারত হয়েই যেতে হবে। ধরুন, আপনি কম খরচে ভালো চিকিৎসা নেবেন, তাহলে কিন্তু আপনাকে এই ভারতেই যেতে হবে। ধরুন, আপনি কম খরচে বিদেশে ঘুরতে যাবেন, সেটিও কিন্তু এই ভারতেই যেতে হবে বা যেতে পারবেন।

আমাদের তো বেশকিছু নিত্যপণ্য থেকে শুরু করে কি না দিয়ে সহযোগিতা করছে এই ভারত। সবকিছুই দিচ্ছে তাঁরা। সুতরাং আমাদের ৩ দিকে যাঁরা (আর একদিকে তো বঙ্গোপসাগরই, আর কেউ যদি দক্ষিণ-পূর্ব দিকের কথা বলে মিয়ানমারের কথা বলেনই, এরপরও আমি বলবো, আমাদের সবদিকেই ভারত), তাঁদের নিয়ে আমাদের চলাটাই কি যুক্তিযুক্ত নয়? এবং তাঁরাও আমাদের নিয়ে চলে, চলবে, এটাই স্বাভাবিক।

কিন্তু কে একজন ধর্ম নিয়ে একটি কথা বললো, আর আমরা ভারত বিরোধিতা শুরু করলাম। এটা কি ঠিক হলো? এই যে ধরুন, ভারতের বিরুদ্ধে তো কেউ কেউ সময়, অসময়, নানা সময়েই বিভিন্ন কথা বলে থাকেন। কিন্তু ভারত কি বাংলাদেশ বিরোধিতা শুরু করেছে? না, তাঁরা কিন্তু করে নি। কারণ জ্ঞানীরা সঙ্গে সঙ্গেই মাথা গরম করে উগ্রপন্থির মতো আচরণ করে না। তাঁরা বিষয়টি আগে বোঝার চেষ্টা করে। এরপর যদি আসলেই অপরাধ হয়, তাহলে তাঁরা সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়, অন্যথায় কখনোই নয়। 

সুতরাং একটি বিষয় যে শুরু হয়েছে, সেই বিষয়ের জন্য আমাদের ভারতের হাই-কমিশন ঘেরাও করতে হবে, বা আরও কর্মসূচি দিতে হবে; সেটি কিন্তু কখনোই কাম্য হতে পারে না। তবে হ্যাঁ, ভারত কিন্তু ধর্ম অবমাননায় নুপুর শর্মা ও নবীন কুমার জিন্দালকে কিছু সময়ের জন্যে হলেও আটক করে বিক্ষোভ দমন করতে পারে। 

সর্বোপরি আমি বলবো, একজন ব্যক্তি একটি কাজ করলে, সেটি কখনোই একটি দেশের উপর বা একটি প্রতিষ্ঠানের ওপর বর্তায় না। আর তা বর্তানো উচিতও হবে না।

আসুন, আমরা শান্তিপূর্ণ হয়ে যাই। কারণ ইসলাম অর্থ কিন্তু শান্তি। সুতরাং আমরা যদি নিজেদেরকে ইসলাম ধর্মের অনুসারী দাবি করি- তাহলে কিন্তু আমরা অশান্তি করতে পারি না। আমার এ আহ্বান মধ্যপ্রাচ্যের সকল দেশ এবং সকল মানুষের জন্যও। আসুন, আমরা ভারত বিরোধিতা বন্ধ করি, বিষয়টি নিয়ে সমঝোতামূলক, প্রয়োজনে বিচারের কথা বলি। এক্ষেত্রে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিতে পারি আমরা। কখনোই ভাঙচুর বা অন্য কিছু না।

সকল প্রাণী তো বটেই, সকল বস্তুর মঙ্গল হোক।