জঙ্গি নেতা জিয়ার পরিকল্পনায় ১৮ সহযোগী ছিনিয়ে নেয় দুই জঙ্গি : ডিবি, ৫ পুলিশ বরখাস্ত
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ ও ডন : জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের প্রধান মেজর (বরখাস্ত) সৈয়দ জিয়াউল হকের পরিকল্পনায় ১৮ সহযোগী মিলে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নিয়েছেন বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে আদালতের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের একজন পরিদর্শকসহ পাঁচজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সোমবার (২১ নভেম্বর) রাজধানীর ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদ।
বরখাস্ত হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন সিএমএম আদালতের হাজতখানার কোর্ট ইন্সপেক্টর মতিউর রহমান, হাজতখানার ইনচার্জ (পরিদর্শক) নাহিদুর রহমান ভূঁইয়া, আসামিদের আদালতে নেওয়ার দায়িত্বরত পুলিশের এটিএসআই মহিউদ্দিন, পুলিশ সদস্য শরিফ হাসান ও আবদুস সাত্তার।
হারুন অর রশীদ বলেন, তাঁরা জঙ্গিদের ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনাস্থল এবং আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করেছেন। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় ২০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২১ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আদালতে আসা ১২ জঙ্গির মধ্যে দুজনকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাকি ১০ জনকে ১০ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনার পর রাজধানীজুড়ে টহল বাড়ানো হয়েছে। অলিগলির সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে দেখা হচ্ছে। শিগগিরই এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানান হারুন অর রশীদ।
ছিনিয়ে নেওয়া দুজন নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের (সাবেক আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) সদস্য। তাঁরা জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন এবং লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এই জঙ্গি সংগঠনের নেতা মেজর (বরখাস্ত) সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া। যার পরিকল্পনায় ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত একাধিক লেখক, প্রকাশক, ব্লগার ও সমকামী অধিকারকর্মীকে হত্যা করা হয়।
রোববার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনাল থেকে জঙ্গিদেরকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাচ্ছিলেন পুলিশ সদস্যরা। তাঁরা যখন সিজেএম আদালতের প্রধান ফটকের সামনে আসেন, তখন হাতকড়া পরা দুই জঙ্গি তাঁদের নিরাপত্তায় থাকা পুলিশের এক সদস্যকে মারধর শুরু করেন। মুহূর্তের মধ্যে আশপাশে থাকা জঙ্গিদের সহযোগীরাও পুলিশের ওপর হামলায় যোগ দেন। পুলিশের ওই সদস্যকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। তাঁদের ওপর হামলা এবং স্প্রে ছিটিয়ে সিজেএম আদালতের প্রধান ফটকের উল্টো দিকের গলি দিয়ে মোটরসাইকেলে করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামির ও মো. আবু ছিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবকে ছিনিয়ে নেয় সহযোগীরা।