ডলার কারসাজি : ৬ ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে অপসারণের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের।

ডলার কারসাজি : ৬ ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে অপসারণের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের।

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ডলার সংরক্ষণ করে দর বৃদ্ধির প্রমাণ পাওয়ায় ৬ ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে ৫টি দেশি এবং ১টি বিদেশি ব্যাংক।

দেশি ৫ ব্যাংক হচ্ছে : ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক, প্রাইম ও সাউথইস্ট ব্যাংক। আর বিদেশি ব্যাংকটি হচ্ছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, ‘ট্রেজারি অপারেশনে অতিরিক্ত মুনাফা করায় ৫টি দেশি এবং ১টি বিদেশি ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, ‘ডলার সংরক্ষণ করে দর বৃদ্ধির প্রমাণ পাওয়ায় জরুরিভিত্তিতে ওই ৬ ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে অপসারণ করতে সোমবার (৮ আগস্ট) সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।’

এদিকে কিছুদিন ‘স্থির’ থাকার পর যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারের বিপরীতে আরও ৩০ পয়সা দর হারিয়েছে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকা। আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে সোমবার ১ ডলারের জন্য খরচ করতে হয়েছে ৯৫ টাকা।

এর আগে সবশেষ ২৫ জুলাই ডলারের বিপরীতে টাকার মান ২৫ পয়সা কমে দাঁড়ায় ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা।

অন্যদিকে কিছু এক্সচেঞ্জ হাউস সোমবারও ১১৫ টাকা ৬০ পয়সায় ডলার লেনদেন করেছে।

পাশাপাশি আরও কিছু ব্যাংকের বিরুদ্ধে বেশি দামে ডলার বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। যেখানে সোমবার (৮ আগস্ট) সিটি ব্যাংক ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করেছে। ইস্টার্ন ব্যাংক বিক্রি করেছে ১০৬ টাকা ৫০ পয়সায় এবং এসআইবিএল ১০৩ টাকা ২৫ পয়সায়।

আবার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রূপালী ব্যাংক একইদিন ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করেছে। অগ্রণী ব্যাংক বিক্রি করেছে ১০৪ টাকায়। জনতা ব্যাংক থেকে নগদ ডলার কিনতে লেগেছে ১০৩ টাকা। আর সোনালী ব্যাংক নিয়েছে ১০২ টাকা।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে টাকা-ডলার বিনিময় হার ঠিক হয়ে থাকে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী। সোমবার ব্যাংকগুলোর চাহিদা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে। দাম নির্ধারিত হয়েছে ৯৫ টাকা। আর এটাই আজকের আন্তব্যাংক দর।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য ঘেঁটে দেখা গেছে, এক মাসের ব্যবধানে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমেছে ৭ শতাংশের মতো। আর এক বছরের ব্যবধানে কমেছে ১২ শতাংশ।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক যে দামে ডলার বিক্রি করছে, ব্যাংকগুলোতে তার চেয়ে ৭ থেকে ১৫ টাকা বেশি দরে ডলার বিক্রি করছে। ফলে আমদানিকারকদের বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে।

অনেক ব্যাংক পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের দাম ১০৫ টাকা পর্যন্ত নিয়েছে।