পেগাসাস তদন্তে সরকার সহযোগিতা করে নি : ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।

পেগাসাস তদন্তে সরকার সহযোগিতা করে নি : ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : ভারতের আলোচিত পেগাসাস তদন্তে সুপ্রিম কোর্টের গড়ে দেওয়া কমিটিকে সহযোগিতা করে নি কেন্দ্রীয় সরকার। কমিটির প্রতিবেদন পেশ হওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রমনা আজ বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) এই মন্তব্য করেছেন। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, তদন্ত কমিটি ২৯টি ফোন পরীক্ষা করেছে। পাঁচটিতে ম্যালওয়্যার পাওয়া গেছে। তবে সেগুলো যে পেগাসাস স্পাইওয়্যার চূড়ান্তভাবে তা জানা যায় নি।

ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান এনএসওর তৈরি পেগাসাস প্রযুক্তির অপব্যবহার-সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্তে সুপ্রিম কোর্ট এই বিশেষ কমিটি গঠন করেছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আর ভি রবীন্দ্রনের নেতৃত্বে ওই কমিটিতে তিনজন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ছিলেন। সেই কমিটির প্রতিবেদন আজ প্রধান বিচারপতি রমনা, বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি হিমা কোহলির বেঞ্চে উত্থাপন করা হয়।

প্রধান বিচারপতি বলেন, প্রতিবেদনে তিনটি ভাগ রয়েছে। দুটি ভাগে বিশেষজ্ঞদের অভিমত রয়েছে, অন্য ভাগে রয়েছে কমিটিপ্রধানের মন্তব্য ও পর্যবেক্ষণ। ওই অংশটি প্রকাশ করা হবে। কমিটি চায় না পুরো প্রতিবেদন প্রকাশ করা হোক।

এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ২৯টি ফোন পরীক্ষা করা হয়েছিলো। ৫টিতে ম্যালওয়্যার পাওয়া গেছে। তবে সেগুলো পেগাসাস স্পাইওয়্যার প্রযুক্তি কি-না, নিশ্চিতভাবে তা জানা যায় নি।

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার ওই কমিটির সঙ্গে সহযোগিতা করে নি বলে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এজলাসে উপস্থিত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, কমিটি বলেছে, সরকার তাঁদের সঙ্গে তদন্তে সহযোগিতা করে নি। আগে যে ভূমিকা সরকার নিয়েছিলো, এখানেও সেই ভূমিকাই নিয়েছে।

সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলি সংস্থা এনএসও পেগাসাস স্পাইওয়্যার প্রযুক্তি তৈরি করেছিলো। দ্য নিউইয়র্ক টাইমস এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে জানায়, বিশ্বের বহু দেশের সরকার ওই প্রযুক্তির অপব্যবহার করছে। 

ভারতও তাঁদের অন্যতম। ওই প্রযুক্তির সাহায্যে ভারত সরকার রাজনৈতিক নেতা, সমাজকর্মী, সাংবাদিক, আইনজীবী, বিচারপতিসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের ফোনে আড়ি পেতেছে। অভিযোগ ওঠে, ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ইসরায়েল সফরের সময় পেগাসাস প্রযুক্তির জন্য দুই বিলিয়ন ডলারের ওই চুক্তি হয়েছিলো।

এই অভিযোগের স্পষ্ট কোনও জবাব কেন্দ্রীয় সরকার কখনো দেয় নি। সংসদে সরকার জানায়, আইন বিরুদ্ধ কিছু করা হয় নি। সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানির সময়েও কেন্দ্রীয় সরকার পেগাসাস-সংক্রান্ত কোনও তথ্য দাখিলে অসম্মতি জানায়। পেগাসাস প্রযুক্তি আদৌ কেনা হয়েছে কি-না বা এর ব্যবহার হচ্ছে কি-না, সেই জবাবও সরকার দেয় নি। সরকারি বক্তব্য ছিলো, নিরাপত্তার স্বার্থে এই বিষয়ে কিছু বলা যাবে না। বিশেষ প্রযুক্তির কথা স্বীকার করা হলে সন্ত্রাসবাদীরা সতর্ক হয়ে যাবে।