বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে নিউইয়র্কের সমাবেশ থেকে ৫ দফা

বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে নিউইয়র্কের সমাবেশ থেকে ৫ দফা
ডন প্রতিবেদন : বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে নিউইয়র্কে এক প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে ৫ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের কাছে । ‘রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ’ শিরোনামের এ প্রতিবাদ সভা আয়োজন করেছে ‘প্রবাসী নাগরিক সমাজ নিউইয়র্ক’। প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহর সভাপতিত্বে সভাটি সঞ্চালনা করেন নাট্যকার তোফাজ্জল লিটন। ২২ অক্টোবর শুক্রবার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্রাঙ্গণে দুই শতাধিক সর্বস্তরের প্রবাসীর উপস্থিতিতে এই দাবি উত্থাপন করেন কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট ও সাংবাদিক মুজাহিদ আনসারী। সমাবেশে বক্তারা বলেন, যে কোনও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলার অর্থই হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তিমূলে আঘাত। এই আঘাত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একতাবদ্ধ হয়ে মোকাবিলা করতে হবে। আর তা না হলে মুক্তিযুদ্ধ থাকবে না, বাংলাদেশ থাকবে না, আমরা কেউ থাকবো না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বক্তারা বলেন, আপনি দেশের ১৮ কোটি মানুষের প্রধানমন্ত্রী। আপনি সবার দিকে সমান দৃষ্টি রাখবেন, এটা আমাদের কাম্য। অন্যান্য অধিকারের মতো বাংলাদেশের সকল মানুষের ধর্মীয় অধিকার সংরক্ষণ করা আপনার দায়িত্ব। সকল মানুষ যেনো ধর্মীয় আচরণ নির্বিঘ্নে পালন করতে পারে এটা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সমাবেশ থেকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে যে ৫ দফা বাস্তবায়নের জন্যে আহ্বান জানানো হয়, তা হলো : ১. বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপুজাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন পুজামণ্ডপে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুর, বিভিন্ন স্থানে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, ক্ষতিপুরণ ও পুর্ণ নিরাপত্তার জোর দাবি। ২. দেশে বর্তমান ঘটনাসহ অতীতের সকল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জন্য দায়ি ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচারের মাধ্যমে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি। সকল সংখ্যলঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা দাবি। ৩. সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জন্যে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করে অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি। ৪. অসাম্প্রদায়িক চেতনায় মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতির প্রথম সংবিধান ৭২ এর সংবিধানের ফিরে যাওয়ার দাবি। ৫. মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠা করার দাবি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে নানা স্লোগানে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে প্ল্যাকার্ড ও ব্যানারসহ উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সকল ধর্মে বিশ্বাসী নারী পুরুষ। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন সাপ্তাহিক ঠিকানা পত্রিকার প্রধান সম্পাদক এম ফজলুর রহমান, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের মুক্তিযোদ্ধা কণ্ঠশিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা খান মেরাজ, তাজুল ইমাম, রেজাউল বারী, অধ্যাপক নবেন্দু দত্ত, অধ্যাপিকা হোসনে আরা, গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সংগঠক সৈয়দ জাকির আহমেদ রনি, সাংবাদিক ও ছড়াকার সনজীবন কুমার, গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক ও মাসিক অন্য দেশ পত্রিকার আল আমিন বাবু, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক স্বীকৃতি বড়ুয়া, ছড়াকার মনজুর কাদের, বাংলাদেশ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় সদস্য মাহতাব সোহেল এবং তরুণ ডেমোক্রেট আহনাফ আলম প্রমুখ।