নগরপিতার ভোটগ্রহণ চলছে কুমিল্লায়।
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলা কাগজ; কুমিল্লা : কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। নগরপিতা নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিচ্ছে কুমিল্লা নগরবাসী।
অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আজ বুধবার (১৫ জুন) সকাল ৮টায় এই ভোট শুরু হয়। চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
ভোট শুরুর আগে সকাল সাড়ে ৭টায় কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে লম্বা লাইন দেখো গেছে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার আরও বাড়ার কথাই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
তাঁরা বলেছেন, সকালে বৃষ্টি হওয়ায় ভোটার কিছুটা কম ছিলো। এখন আবার ভোটারের সংখ্যা বাড়া শুরু করেছে।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের এটি তৃতীয় ভোট। এর আগে দুটি ভোটই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) অনুষ্ঠিত হয়। এবারও আগের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ভোট।
এদিকে ১০৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৮৯টি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে জেলা পুলিশ। ফলে বাড়তি সতর্কতাও নেওয়া হয়েছে।
মেয়র প্রার্থীরা কে কোথায় ভোট দেবেন :
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের মিডিয়া অ্যাডমিন জাকির হোসেন বাঙলা কাগজ ও ডনকে জানান, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেবেন আরফানুল হক রিফাত।
টেবিল ঘড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর ব্যক্তিগত সহকারী কবির হোসেন মজুমদার বাঙলা কাগজ ও ডনকে জানান, সকালে মা-বাবার কবর জেয়ারতের পর ১২ নম্বর ওয়ার্ডের হোচ্ছামিয়া বিদ্যালয়ে ভোট দেবেন সাক্কু।
ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সারের রাজনৈতিক কর্মী সাজ্জাদ হোসেন জানান, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেবেন নিজাম।
হরিণ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান বাবুল বলেন, ‘১৩ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ চর্থা বড় পুকুড়পাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেবো।’
হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী রাশেদুল ইসলাম জানান, তিনি ২২ নম্বর ওয়ার্ড পদুয়ার বাজার হাজি আক্রাম উদ্দিন বিদ্যালয়ে ভোট দেবেন।
এর আগে দু’বার ভোটে বিএনপি সমর্থিত মনিরুল হক সাক্কু মেয়র নির্বাচন হন। এবার নৌকার একক প্রার্থী থাকলেও বিএনপি সমর্থিত দুইজন প্রার্থী নির্বাচনের মেয়র পদে লড়াই করায় নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত কিছুটা বাড়তি সুবিধা পাবেন এমনটাই মনে করছেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাধারণ ভোটারেরা।
এ ছাড়া অতীতের যে কোনও সময়ের চেয়ে কুমিল্লা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থান অনেক বেশি শক্তিশালী, তাই জয়ের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ এবার অনেক বেশি আশাবাদী।
কুসিক নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বিভিন্ন স্তরের ৩ হাজার ৬০৮ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বসানো হয়েছে সিটির বিভিন্ন পয়েন্টে ৭৫টি চেকপোস্ট। ভ্রাম্যমাণ মোবাইল টিম রয়েছে ১০৫টি। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে ১২ প্লাটুন, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যটালিয়নের রয়েছে ৩০টিম এবং অর্ধশত নির্বাহী ও ৯ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট।
এর বাইরে সাধারণ ও গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে রয়েছে যথাক্রমে ২২ ও ২৪ জন করে পুলিশ, আনসার, ব্যাটালিয়ন আনসারসহ গ্রাম পুলিশের সদস্য। বলা যায়, পুরো সিটি এলাকা নিরাপত্তার চাঁদরে মোড়া রয়েছে।
এই প্রথমবারের মতো কেন্দ্রের বাইরে-ভিতরে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা।
কুমিল্লা সিটিতে এবারের নির্বাচনে ৫ মেয়র প্রার্থীসহ সাধারণ ও সংরক্ষিত মিলিয়ে ১৪৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
কুমিল্লা নির্বাচনে এবার মোট ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ২৯ হাজার ৯২০ জন। তাঁদের মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ১২ হাজার ৮২৬ জন। আর নারী ভোটার ১ লাখ ১৭ হাজার ৯২ জন।
এ ছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন দুইজন।
এবার যোগ হয়েছিলো ২২ হাজার নতুন ভোটার।