এস আলমের জালিয়াতির বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ব্যবস্থা নিন এখনই

এস আলমের জালিয়াতির বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ব্যবস্থা নিন এখনই

সম্পাদকীয় মত, বাঙলার কাগজ ও ডন : জনতা ব্যাংকে এস আলম গ্রুপের ১৭ হাজার কোটি টাকার জালিয়াতি রয়েছে। যা বেশকিছু গণমাধ্যমে ইতোমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে। এই জালিয়াতির অর্থ এদিক-সেদিক করে পূরণ করার জন্য শেয়ার কেনার মাধ্যমে গ্রুপটি কয়েকটি ব্যাংক তাঁদের ‘নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে’। এর সবগুলোই ইসলামী ব্যাংক। এখন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ সাহেবের সবচেয়ে খাস লোক আবদুল কাদের ইউনিয়ন ব্যাংকের পান্থপথ শাখায় বিপুল পরিমাণে জালিয়াতি করার পর, সেটি ধরা পড়ায় এখন তিনি কমার্স ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় আছেন। এখানেও নাকি তাঁকে মাসুদ সাহেব পাঠিয়েছেন। পরে এখন এস আলম গ্রুপ জনতা ব্যাংকে কর্মকর্তাদের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিভিন্ন ব্যাংকে এমডি ও ডিএমডি এবং অন্যান্য পদবির কর্মকর্তা হিসেবে লবিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়াচ্ছে। যাতে তাঁদের জালিয়াতি ‘হালাল’ করা যায়। তাঁরা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বেশ কয়েকটি ব্যাংক থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ বের করে নিয়েছে; যার পুরোটাই ক্ষতি হয়েছে সরকারের। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে সাম্প্রতিক সময়ে করা ব্যাংকটির জালিয়াতির কথা তো বলাই বাহুল্য। ইসলামী ব্যাংকিংয়ের নামে বাংলাদেশের কোমলপ্রাণ মানুষকে ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন এখনই। না হয় দেখবেন, এস আলম গ্রুপ এই জালিয়াতির অর্থ দিয়েই আওয়ামী লীগকে হটিয়ে বিএনটিকে ক্ষমতায় আনতে কাজ করবে এবং করছে। সুতরাং তাঁদের জালিয়াতির লাগাম টেনে ধরে বিভিন্ন ব্যাংকের আমানতকারীদের স্বস্তি দিন; অন্যথায় দেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংক লেফাফাদুরস্তি থেকে স্বর্বস্বান্ত হয়ে যাবে।

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ সাহেব সিঙ্গাপুরে থেকে সব জালিয়াতি করাচ্ছেন। সবমিলিয়ে দেশের আর্থিক খাতকে ভালো রাখতে তথা রিজার্ভ ভালো পরিমাণে রেখে জনগণের আমানত ব্যাংকগুলোতে ভালো পরিমাণে রাখার মাধ্যমে তার‌ল্য সঙ্কট কাটাতে এখনই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। পাশাপাশি আবদুল কাদেরসহ ইউনিয়ন ব্যাংকে নিয়োগ প্রক্রিয়া, পদোন্নতি এবং এক ব্যাংক থেকে আরেক ব্যাংকে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া এখনই খতিয়ে দেখুন। না হয় দেখবেন, বাংলাদেশের বেশকিছু রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংক আবারও সরকারের বাজেট থেকে অর্থ বরাদ্দ চাইছে। এস আলমকে আইবিপি (অভ্যন্তরীণ বিল ক্রয়), এলএটিআর (লোন এগেইনেস্ট ট্রাস্ট রিসিপ্ট) এবং করপোরেট গ্যারান্টির মাধ্যমে দেওয়া ঋণ খতিয়ে দেখুন এখনই এবং ব্যবস্থা নিন দ্রুততম সময়ে।

আরও একটি বিষয় যোগ করা যায়, সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, নাবিল গ্রুপের নামে একটি গ্রুপের নামে কাগুজে প্রতিষ্ঠান তৈরি মাধ্যমে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক এবং সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক থেকে সম্প্রতি ৬ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। আর ইউনিয়ন ব্যাংকের তো প্রায় সম্পূর্ণ আমানতই ভুয়া ঋণ দেখিয়ে ব্যবহার করছে এস আলম গ্রুপ। যার প্রমাণ হিসেবে ব্যাংকটি থেকে রাতের বেলায় বিপুল অর্থ ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া এবং আমানতের হিসাবে সম্পূর্ণ গরমিলই বলে দেয়। যা বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক পরিদর্শনে বেরিয়ে এসেছে। সুতরাং এক কলসির পানি অপর কলসিতে ঢালা এবং জালিয়াতির প্রতিবেদন বন্ধ করতে এস আলম গ্রুপের তৎপরতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন এখনই।