কী চলছে ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে

কী চলছে ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : ইসরায়েলের ভূখণ্ডে শতাধিক ড্রোন দিয়ে হামলা করেছে ইরান। ইরানের রেভোল্যুশনারি গার্ডের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সে দেশের গণমাধ্যম। ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শনিবার (১৩ এপ্রিল) ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে কয়েক ডজন ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে তারা। ‘ট্রু প্রমিজ’ নামে অভিযানের আওতায় এসব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। তবে এ ঘটনার পর ইসরায়েল জানিয়েছে, ইরান, ইরাক ও ইয়েমেন থেকে তাদের দিকে তিন শতাধিক ড্রোন এবং ক্ষেপনাস্ত্র হামলা করা হয়েছে। তবে এর বেশিরভাগই থামিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন তাঁরা।

পহেলা এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানের কনসুলেটে বিমান হামলা চালিয়ে ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের দুই শীর্ষ কমান্ডারসহ মোট সাতজনকে হত্যা করে ইসরায়েল। কারণ অভিযোগ ছিলো, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধে হামাসদের অস্ত্র সরবরাহ করছিলো ইরান।

ইসরায়েলে হামলার পর ইরান জানিয়েছে, সিরিয়ার ওই কনস্যুলেটে হামলার বিষয়টি এখন নিষ্পত্তি হয়েছে বলে তারা মনে করে। ইসরায়েল যদি পাল্টা হামলা না করে, তাহলে ইরানের হামলার সমাপ্তি এখানেই, বলেছেনইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রধান। তবে ইসরায়েল আক্রমণে ইরানের সঙ্গে যোগ দিয়েছে ইরানপন্থী সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ এবং হুথি বিদ্রোহীরা।

কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইসরায়েল :
ইসরায়েল জানিয়েছে হামলার প্রায় ৯৯ শতাংশ ক্ষেপনাস্ত্র ধ্বংস করে দিতে সক্ষম হয়েছেন তাঁরা। হামলায় আহত হয়েছেন কয়েকজন, এর মাঝে রয়েছে সাত বছর বয়সী এক বেদুইন শিশু। আর ইসরায়েলের বিমান ঘাঁটি নেভাটিমে অন্তত ১৫টি ক্ষেপনাস্ত্র আঘাত করেছে।

এদিকে ইরান জানিয়েছে, এখনো তথ্যের জন্য অপেক্ষা করছে তারা। তবে তারা যা আশা করেছিলো, ইসরায়েলের ক্ষয়ক্ষতি তার চেয়েও বেশি হয়েছে। 

ইসরায়েলের পক্ষে এবং বিপক্ষে যারা :
এই হামলাকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। মিশর, জর্ডান, লেবানন ও ইরাকসহ সবগুলো দেশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

চলমান পরিস্থিতিতে সৌদি আরব বলেছে, তারা আঞ্চলিক পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ইরানের এসব ড্রোন ও ক্ষেপনাস্ত্র থামিয়ে দিতে ইসরায়েলকে সহায়তা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী থেকে জানানো হয়েছে, এ সময় যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য মিত্র দেশের পাশাপাশি ফ্রান্সের সহায়তাও পেয়েছে তাঁরা।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র জর্ডান ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন জানায়। দেশটি বলেছিলো, তাদের আকাশ সীমানায় কোনও ক্ষেপনাস্ত্র বা ড্রোন প্রবেশ করলে ইসরায়েল পর্যন্ত যাওয়ার আগেই তাঁরা তা ধ্বংস করে দেবেন।

জানা গেছে, ইরানের হামলার পর ইসরায়েলের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

হামলার পর দ্রুত আকাশপথ বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। একইসঙ্গে ইরাক, জর্ডান এবং লেবানন তাঁদের আকাশপথ বন্ধ করে দিয়েছে এমনটাও জানা যায়। এমিরেটস এয়ারলাইনস তখন কিছু ফ্লাইট বাতিল করে।

তবে ইতোমধ্যেই আবারও আকাশপথ খুলে দিয়েছে ইসরায়েল, জর্ডান এবং ইরাক। 

ইসরায়েল ও ইরানের বৈরিতা বহুদিনের। তবে এবারই প্রথম সরাসরি ইসরায়েলে হামলা করলো ইরান। এমন অবস্থায় ইসরায়েল এবার ইরানে পাল্টা হামলা চালাতে পারে। সম্ভাব্য সেই হামলার আশঙ্কায় ইরান সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলেই জানা গেছে।