সারাদেশে ৩২১৬৮ মণ্ডপে দুর্গাপূজা

সারাদেশে ৩২১৬৮ মণ্ডপে দুর্গাপূজা

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) মহালয়ার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে দুর্গাপূজার। আর পহেলা অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে ৫ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পূজা। বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় এই উৎসব এবার সারাদেশে ৩২ হাজার ১৬৮টি মণ্ডপে উদ্‌যাপন করা হবে।

আজ শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ।

পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার জানান, গত বছর সারাদেশে দুর্গাপূজার সংখ্যা ছিলো ৩২ হাজার ১১৮টি। এবার এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ১৬৮টি। ঢাকা মহানগরে পূজার সংখ্যা ২৪১টি, যা গত বছরের থেকে ৬টি বেশি।

পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক বলেন, গত বছরের ঘটনার প্রেক্ষাপটে এ বছর সরকার চাইছে, কোনও অবস্থাতেই যেনো কোনও অঘটন না ঘটে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা গত বছরের তুলনায় এ বছর অনেক বেশি সক্রিয়। 

তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, দুই লাখের বেশি আনসার সদস্য থাকবে। এর জন্য বরাদ্দও সরকারকে দিতে হয়। আইন প্রয়োগকারী সদস্যের সংখ্যা বাড়ানো কঠিন হবে এবং এভাবে রক্ষা করা যাবে না। আমরা প্রতিটি মন্দিরে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করেছি অন্যান্য যে কোনও সময়ের চেয়ে বেশি। তবে আমরা মনে করি, আমাদের ৩২ হাজারের ১৬৮টি মন্দিরের সুরক্ষা দেওয়া খুব কঠিন। তাই আমরা এ বছর প্রত্যেক মন্দিরে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করছি, যাঁরা রাতেও পাহারা দেবে। 

গত বছর কুমিল্লায় একটি মণ্ডপে প্রতিমার ওপর কোরআন রাখার অভিযোগে বিভিন্ন মন্দির ও পূজামণ্ডপে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ হয়। তার জেরে আরও কয়েকটি জেলায়ও হামলার ঘটনা ঘটে। জে এল ভৌমিক আগামী নির্বাচনের আগেই ধর্মীয় সংখ্যালঘু সুরক্ষায় আইন প্রণয়ন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণেই বারবার ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলা হচ্ছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ইশতেহারে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইনের কথা বলা হয়েছে। আগামী নির্বাচনের আগেই এটা করতে হবে।

হিন্দু ধর্মীয় নেতারা জানান, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত দুই বছর সীমিত পরিসরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে করোনার লাগাম ইতোমধ্যে টেনে ধরা গেছে। তাই এবার উৎসবের রঙে ফিরছে দুর্গাপূজা।

পরিষদের সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রনাথ পোদ্দার বলেন, আমরা এমন একটা পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাই, যা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। পূজা, ঈদ, বড়দিন, বুদ্ধপূর্ণিমা- এসব কেনো পুলিশের সুরক্ষায় হবে? তার মানে রাষ্ট্রের দুর্বলতা ও ব্যর্থতা আছে।

গুজব রটলে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেওয়া, মণ্ডপে সিসিটিভির ব্যবস্থা করা, ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা স্বেচ্ছাসেবকের ব্যবস্থা করা-  দুর্গাপূজা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে এমন ২১ দফা নির্দেশনা জারি করেছে পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ।